লখিমপুর খেরিতে গাড়ি চালিয়ে আন্দোলনরত কৃষকদের পিষে দেওয়ার ঘটনার ৬ দিন অতিক্রান্ত। এখনও পর্যন্ত মূল দোষী অধরা। আর এর মাঝেই প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও করার হুমকি দিলেন আজাদ সমাজ পার্টির প্রধান এবং দলিত নেতা চন্দ্রশেখর আজাদ। শুক্রবার তিনি ঘোষণা করলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে কৃষকদের খুনের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার না করা হলে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও করবেন তিনি এবং তাঁর দলের সমর্থকরা।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে আজাদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সমস্ত ঘটনার উপর নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে টুইট করেন। কিন্তু কৃষকদের হত্যার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। দোষীরা উন্মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।। সাত দিনের মধ্যে দোষীরা গ্রেফতার না হলে আমরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও করব’।
তিনি আরও বলেন, কৃষকদের পরিবারগুলি যখন স্বজন হারানোর বেদনায় ছটফট করছিলেন তখন প্রধানমন্ত্রী লখনৌতে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ পালনে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁর কথায়, কৃষকদের মৃত্যুর সময় যাঁরা মুখ বন্ধ করে থাকেন, তাঁরা আর যাই হোন, দেশের প্রতি বিশ্বস্ত হন না। প্রধানমন্ত্রীর উচিত লখিমপুর খেরিতে গিয়ে নিহত কৃষকদের পরিবার এবং আন্দোলনরত কৃষকদের সাথে কথা বলা।
৩ অক্টোবরের ঘটনাটিকে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের সাথে তুলনা করেন আজাদ এদিন। তিনি বলেন, আগামী উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে এই ঘটনার ব্যাপক প্রভাব পড়বে। উত্তরপ্রদেশে কোনও আইন-কানুন নেই দাবী করে এদিন যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগও দাবী করেন চন্দ্রশেখর আজাদ।
উল্লেখ্য, গত ৩রা অক্টোবর ৩ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি এলাকায় রাজ্যের ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যকে উদ্দেশ্য করে রাস্তায় আন্দোলনরত কৃষকদের উপর দিয়ে চলে যায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এবং বিজেপি সাংসদ অজয় কুমার মিশ্রার ছেলের গাড়ি। মন্ত্রীর ছেলের গাড়ির চাকায় পিষে ঘটনাস্থলেই প্রান হারান আন্দোলনরত চার কৃষক। ঘটনাকে কেন্দ্র করে কৃষকদের সাথে বিজেপি কর্মীদের খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে। যার জেরে প্রান হারান আরও চার জন (নিহতদের মধ্যে তিনজন বিজেপি কর্মী)। মোট আট জনের দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুতে কেঁপে ওঠে জাতীয় রাজনীতি। কেন্দ্র সরকারকে একযোগে আক্রমণ শুরু করে দেশের সমস্ত বিরোধী শক্তি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রার পদত্যাগও দাবী করা হয় বিরোধীদের তরফ থেকে। ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার না করা নিয়ে যোগী সরকারকে ভর্ৎসনাও করেছে সুপ্রিম কোর্ট।