নাগাল্যান্ডের (Nagaland) মন জেলার টিরু গ্রামে সেনার চালানো গুলিতে ১৪ জনের মৃত্যু নিয়ে কার্যত উথাল-পাথাল দেশের রাজনীতি। আর এরমধ্যেই সেনার পক্ষ নিয়ে লোকসভায় ঘটনার ‘সাফাই’ গাইলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Union Home Minister) অমিত শাহ্ (Amit Shah)। বললেন, ‘গাড়িতে উগ্রপন্থী রয়েছে’, এই সন্দেহেই গুলি চালায় সেনা।
ঠিক কি বিবৃতি দিয়েছেন অমিত শাহ্? তাঁর কথায়, ‘ঘটনাস্থলে উগ্রপন্থীদের উপস্থিতির তথ্য পেয়েছিল ভারতীয় সেনা। সেই মতো তাঁরা ঘটনাস্থলে অভিযান চালান। সে সময়ে আচমকাই এলাকায় একটি গাড়ি গাড়ি ঢুকে পড়ে। গাড়িটিকে থামাতে গেলে গাড়ির গতি বাড়িয়ে পালাতে যায় আরোহীরা। এরপরেই উগ্রপন্থী (terrorist) সন্দেহে গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায় সেনাবাহিনী। যার জেরে গাড়িতে থাকা ৮ জনের মধ্যে মৃত্যু হয় ৬ জনের। এর পাল্টা সেনা চৌকিতে হামলা চালায় গ্রামবাসীরা। তাঁরা ভাঙচুর করেন। আগুন লাগিয়ে দেন সেনাবাহিনীর একাধিক গাড়িতে। আত্মরক্ষার্থে আবারও গুলি চালায় সেনা। যার ফলে আরও ৭ গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। এদিকে স্থানীয়দের হামলায় নিহত হয় এক জওয়ানও। এরপর আসাম রাইফেলসের (Assam Rifles) দফতরেও হামলা চালায় বিক্ষুব্ধরা। সেখানেও গুলিতে মৃত্যু হয় একজনের। ঘটনার তদন্তের জন্য ইতিমধ্যেই বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করা হয়েছে। একমাসের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছে সেনাবাহিনী। নাগাল্যান্ডের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছে ভারত সরকারও (GOI)’।
এদিকে ঘটনায় চরম বিক্ষুব্ধ নাগা সরকার এবং প্রশাসন। নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিও (Neiphiu Rio) ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের কাছে আফস্পা (AFSPA act) আইন প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, এই আইন দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এবিষয়ে নেইফিউের পাশে দাঁড়িয়েছেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা (Conrad Sangma), তৃণমূল (TMC)। আসাম রাইফেলসের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে নাগাল্যান্ড পুলিশ। এফআইআর-এ (FIR) তাঁরা জানিয়েছেন, সাধারন নাগরিকদের আহত এবং খুন করাই ছিল নিরাপত্তাবাহিনীর মূল উদ্দেশ্য। অশান্তি প্রশমনের উদ্দেশ্যে বর্তমানে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে মন জেলায়। তদন্তের জন্য ইতিমধ্যেই বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছেন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিও।