রাতের অন্ধকারে সাত বছরের এক বাচ্ছা মেয়ের গলা জড়িয়ে প্রায় দুঘণ্টা বসে রইল বিষধর কেউটে সাপ। যদিও সরাতে গেলে সাপটি শেষমেশ কামড় দেয় শিশুটিকে। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত শিশুর ধৈর্য আর বাহাদুরি দেখে স্তম্ভিত গ্রামবাসীরা। শরীরে শিহরণ জাগানো এমন ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের নাগপুর জেলার বোরখেডি গ্রামে। স্বস্তির খবর, বর্তমানে নিরাপদেই রয়েছে শিশুটি।
সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার মধ্যরাত্রে। রাত্রি ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ শিশুটির মা হেমলতা গড়কড়ির ঘুম ভাঙে অস্বাভাবিক এক শব্দে। ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখেন পাশে শুয়ে থাকা মেয়ের গলায় পেঁচিয়ে রয়েছে এক বিশাল কেউটে সাপ। হাড় হিম করা দৃশ্য দেখে প্রথমে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তবে উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে তিনি তাঁর সন্তানকে শান্ত থাকার উপদেশ দেন। মায়ের কথানুযায়ী একটুও নড়াচড়া না করে চুপচাপ শুয়ে থাকে একরত্তি। সাহায্যের আশায় প্রতিবেশীদের খবর দেন মেয়েটির বাবা পদ্মাকর গড়কড়ি।
এক প্রতিবেশীর কথায়, প্রায় দুঘণ্টা ওই অবস্থাতেই শিশুর গলায় জড়িয়ে থাকে সাপটি। যদিও প্রতিবেশীরা সেই সময় শিশুটিকে সাহায্য করার থেকে সাপের সাথে শিশুর ছবি এবং ভিডিও তুলতেই বেশি ব্যস্ত ছিল। শেষপর্যন্ত অনেক খুঁজে তাঁরা জোগাড় করেন সর্প-উদ্ধারকারীর ফোন নম্বর। প্রায় ১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান সর্প-উদ্ধারকারী।
সর্প-উদ্ধারকারী এসে সাপটিকে ধরার চেষ্টা করলে সেটি শিশুটির বাঁ হাতের কনুইয়ে কামড় বসিয়ে চোখের নিমেষে ঘটনাস্থল থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। ঘটনার পরেই শিশুটিকে নিয়ে তড়িঘড়ি হাসপাতালে পৌঁছান প্রতিবেশীরা। হাসপাতালে শিশুটির চিকিৎসা শুরু হয়। বর্তমানে সুস্থ আছে শিশুটি। হাসপাতালের শিশুবিভাগের প্রধান মনিষ জৈন জানিয়েছেন, শিশুটি এখন আশঙ্কামুক্ত এবং চিকিৎসায় সাড়া দিয়ে খুব দ্রুত সেরে উঠছে।
তবে সাত বছরের শিশুর এমন সাহসিকতায় তাজ্জব গ্রামবাসী থেকে চিকিৎসকরা। পাশাপাশি এমন ঘটনা চিন্তাও বাড়াচ্ছে গ্রামবাসীদের মনে। বিশেষ করে যারা মাটিতে শুয়ে থাকেন তাঁদের মনে ভয় ধরিয়েছে এই ঘটনা। তাঁদের চিন্তা, সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া অতি ভারি বর্ষণে সাপেদের বাসস্থান এখন জলমগ্ন। তাই তারা যেকোনো সময়ে উঠে আসতে পারে গৃহস্থালির অন্দরে।