ভালো মন্দ তো আপেক্ষিক, দিনের শেষে থেকে যায় শিল্প; ঋষভ বসু

সৃজিতা ব্যানার্জী
প্রকাশিত: 15/05/2022   শেষ আপডেট: 19/09/2022 12:24 a.m.
instagram.com/rishav_for_you

ইঞ্জিনিয়ার এবং ফুটবলার হওয়ার মাঝে, হয়ে উঠলেন অভিনেতা! ঋষভ বসুর সেই যাত্রার সফর-সঙ্গী হল, টিম পরিদর্শক

ইঞ্জিনিয়ার এবং ফুটবলার হওয়ার মাঝে, হয়ে উঠলেন অভিনেতা! ঋষভ বসুর সেই যাত্রার সফর-সঙ্গী হল, পরিদর্শক

সম্প্রতি তিনি জড়িত হয়েছেন, 'মহাভারত মাডার্স'-এ, 'শ্রীকান্ত'র অভিযান পেরিয়ে এখন নতুন অভিযানের দোসর 'ভটভটি', ঋষভ বসুর অন্দরমহলে, খোঁজ নিল টিম পরিদর্শক

১) কেমন উপভোগ করলে, শহর জুড়ে 'শ্রীকান্ত'র মরশুম?

  • 'মরশুম' বলাটা বাতুলতা হবে বলে মনে হয়, কারণ এখন তো গ্রীষ্ম! প্রচন্ড গরম! মাঝে তাও বৃষ্টি উঁকি দিচ্ছে! আমি যদিও এখানে ছিলাম না, আবু ধাবিতে ছিলাম, এসে দেখি ভীষন গরম পড়েছে! 'শ্রীকান্ত'র কথা যদি বলি, সবটা মিলিয়ে ভালোই উপভোগ করছি! দর্শকের ভালো লাগছে। অনেকেই ব্যাক্তিগতভাবে জানাচ্ছেন যে ভালো লাগছে! আমরা খুব ভয় ভয়েই ছিলাম, কারণ দর্শক নতুন কাজকে গ্রহণ করার তুলনায় সমালোচনা করতে বেশি উৎসাহী হন! এবং 'শ্রীকান্ত' যেহেতু একটি কালজয়ী উপন্যাস, সকলেই কম বেশি আমরা শরৎচন্দ্রের 'শ্রীকান্ত'র অভিযানে সামিল হয়েছি, তাই এই যুগে দাঁড়িয়ে ইয়ং জেনারেশন তথা সমগ্র দর্শক মহলের কাছে পৌঁছতে পারলে, সত্যি সেটা আমাদের জন্য আশ্বাসের ব্যাপার! 'শ্রীকান্ত' দেখে আবার কেউ যদি উপন্যাসটি পড়েন, তাহলে আরো সার্থকতা পাবে আমাদের কাজ! সকলে উপভোগ করছেন, আমার মা'ও উপভোগ করেছেন, এগুলোই আমার প্রাপ্তি!

২) ভালোর সঙ্গে নিশ্চয়ই অনেক সমালোচনাও এসছে! সেগুলোকে কিভাবে গ্রহণ করছো?

  • আমাদের স্বাধীন দেশ, সকলের স্বাধীন, ভিন্ন চিন্তা! সকলের ভালো নাই লাগতে পারে! যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁরা তো আমাদের কাজ দেখেই করছেন! তাঁরাও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ন! দর্শকের তো পর্যবেক্ষণ করে ভালো, খারাপের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে! কিন্তু যাঁরা না দেখে কটু কথা বলছেন, তাঁদেরকে আমার কিছু বলার নেই! যাঁরা দেখে বলছেন, আমরা তাঁদেরটা শুনছি, চেষ্টা করবো যদি পরের সিজন হয়, আরও ভালো কিছু করে তোলার। সবসময় ভালোর দিকে এগোতে হবে। সমালোচনা হল আমার ব্যক্তিগতভাবে চালিকা-শক্তি, যাতে পরবর্তী ক্ষেত্রে খুঁতগুলো আমি নির্ণয় করে, সঠিক পথে এগিয়ে যেতে পারি!

৩) 'শ্রীকান্ত' একটি ঔপন্যাসিক চরিত্র, তাঁকে এই যুগে দাঁড়িয়ে নতুন ভাবে রূপ দেওয়া! অভিনেতা হিসেবে কি কি মাথায় রাখতে হয়েছে তোমায়?

  • উপন্যাসটি তো আমার মাথায় ছিলই, চরিত্রের ফিলোসফিটা আমার মনে হয় খুব একটা ক্ষুন্ন করা হয়নি! 'দেব ডি' ও হয়েছে, আমার মনে আছে তখনও অনেকে সরব হয়েছিলেন 'দেবদাস' এর বিকৃতি ঘটানো হয়েছে বলে! 'শ্রীকান্ত'র ক্ষেত্রেও আমাদের মনে হয়েছে, নতুন ভাবে রিপ্রেজেন্টেশনে তো একটা রিস্ক থেকেই থাকে, এবার এটাই শিল্পের মজা! যে যার মত ভাঙচুর করে উদঘাটন করবে একটি শিল্পকে! যেটা আমাদের ক্ষেত্রে গল্প এবং চরিত্রের দিক দিয়ে হয়েছে, আমরা পুরনো গল্পটিকে নতুন আঙ্গিকে করার চেষ্টা করেছি, যেটি আজকের দিনের প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছতে পারে! আজকের যুগে দাঁড়িয়ে সম্পর্কের যে সমস্যাগুলো চোখে পরে, যে ভালোবাসার সংকট, সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে! আমাদের আগের প্রজন্মের প্রেম করার ধরন আলাদা ছিল, আমাদের ছোটবেলায়ও মানুষ প্রেম করতেন, তখন এত মোবাইল, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ছিলনা। তখন মানুষ লুকিয়ে এসটিডি বুথ থেকে ফোন করতেন, তখন একটা গোপনীয়তা ছিল! কিন্তু এখন সোশ্যাল মিডিয়া এসে যাওয়ায় সবকিছু গোপনীয়তা লঙ্ঘন করছে! সন্দেহগুলো বেড়ে যাচ্ছে। যান্ত্রিকতা ঘিরে ধরছে! আমি আশেপাশে দেখি যে, সব সম্পর্কের মধ্যেই এই সংকট বিরাজ করছে। সে বিবাহিত, অবিবাহিত, প্রেম করছেন যাঁরা সকলের মধ্যেই এই ক্রাইসিসটি দেখা যাচ্ছে। তো এই ভালোবাসা, অবিশ্বাসের দ্বন্দ্বটা, এই যুগে দাঁড়িয়ে এত প্রকট, সেটাই 'শ্রীকান্ত'তে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়েছে। যদিও আমার ব্যক্তিগত মতাদর্শে, ভালোবাসা সব কিছুর উর্ধ্বে, ভালোবাসার কোন নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা হয়না, ব্যাকরণ হয়না। আমার তরফ থেকে ভালোবাসাকেই নতুন আঙ্গিকে রূপ দেওয়ার চেষ্টা ছিল, পরিচালক আমায় সেই ভার দিয়েছিলেন, সেটাই করার প্রচেষ্টা করেছি মাত্র।

৪)তোমার তুলনায় সোহিনী সরকার সব দিক দিয়েই প্রায় অভিজ্ঞ, তাঁর সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করবার অভিজ্ঞতা কেমন?

  • সোহিনীর সঙ্গে আমার ব্যাক্তিগতভাবে পরিচয় হয় ২০১৮ সালে, যখন আমরা নটধায় থিয়েটার করতাম, মঞ্চে অভিনেতা হিসেবে আমাদের তখন সম্পর্ক তৈরি হয়। দুজনেই আমরা মঞ্চের মানুষ! ওঁর সঙ্গে কাজ করা সত্যিই একটি দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা! সোহিনী ভীষণ পেশাগত, ওঁর জন্য ঘনিষ্ট দৃশ্যে অভিনয় করতে কোন অসুবিধা হয়নি, খুব সহজভাবে ও সবটা গুছিয়ে নিয়েছিল। আমিও ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, যতক্ষণ চরিত্রে আছি, ততক্ষণ যেন আমি সেটাই থাকি! তার বাইরে কার সঙ্গে কিরম সম্পর্ক, সে ব্যাপারে আমি মনোনিবেশ করিনা। তখন কেবল চরিত্র থেকে চরিত্রের রসায়নটা আমি মেনে চলি!

৫) অভিনয় জীবনের শুরু কিভাবে?

  • অভিনয় জীবনের শুরু বেশ একটি ইন্টারেস্টিং গল্প! আমি ফিল্ম নিয়ে পড়াশুনা করেছি! তো যখন স্টার জলসায়, 'মা' সিরিয়ালটি হত, তখন আমার এক পিসতুতো দিদি সেখানে অভিনয় করতেন। আমি তাঁর কাছে যেতাম এবং ক্যামেরার কাজ দেখার ব্যাপারে খুব উৎসাহী হয়ে পড়তাম! সেখানেই কেউ দিদিকে আমার কথা বলেন, যে আমি অভিনয় করার কথা ভাবতে পারি! বাড়িতে সেটা মা'কে জানাই, আমার মা শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন। আমার মা আমায় বলেন যে, অভিনয় তো একটি শিল্প, তুমি শেখো আগে, থিয়েটার করো, তারপর দেখো কি হয়! আমিও আগে থিয়েটার করা শুরু করি! ততদিন আমি কোনো সিরিয়ালে কাজ করিনি। বিভিন্ন দলে আমি থিয়েটার করি, ন্যাশনাল স্কলারশিপ পাই ২০১০ এ। ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামাতেও ওয়ার্কশপ করেছি! 'বহুরূপী'র মত প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত থিয়েটার করেছি! থিয়েটার থেকেই আমার শুরু! থিয়েটার থেকেই আমার পরিচিতি আসে, এবং রুপোলি পর্দায় হাতেখড়ি হয়!

৬) অভিনয় জগতে, কেউ অনুপ্রেরণা ছিলেন তোমার?

  • আমির খান! আমির খানের 'হিরো' ইমেজে ছোটবেলায় মজে থাকতাম, তারপর শিল্পী আমির খানের সেই 'হিরো' ইমেজ ভেঙে, নিজেকে যেকোনো চরিত্রে প্রতিষ্ঠা করা আমায় মুগ্ধ করলো! কখনও তাঁকে প্রযোজক হিসেবে পাওয়া, কখনো পরিচালক, কখনও বা এমন চরিত্রে যা সহজে বলিউডের অন্য অভিনেতারা করবেন বলে ভাবতেই পারেননা, সেরকম চরিত্রে তাঁকে দেখে আমি অনুপ্রেরণা পাই! এছাড়া হলিউড অভিনেতা মার্লন ব্র্যান্ডোকে আমি ঈশ্বর হিসেবে মানি!

৭)তোমার বাড়ি কোথায়? কে কে আছেন?

  • আমার বাড়ি উত্তর কলকাতায়! কাঁকুরগাছিতে। একেবারে উত্তর কলকাতার আমেজে বড় হয়েছি। রকে বসে আড্ডা, ক্যারাম খেলা, সবকিছু নিয়েই! এখনও তাই! আমি খুব ভাগ্যবান যে আমি এমন পরিবেশে জন্মেছি! সবরকম মানুষের মাঝে, তাঁদের আনন্দ, বিষাদে সঙ্গী হতে পেরেছি।

বাড়িতে আছেন মা, বাবা, এবং আমার কিছু পোষ্য, মার্জার গোত্রের (হাসি)।

৮) ছোটবেলায় কেমন ছিলে?

  • ছোটবেলায় একেবারেই এখনকার আমি'র উল্টো ছিলাম, স্কুলে প্রায়ই মা বাবাকে ডাকা হতো! বেশ দুষ্টু ছিলাম! ফুটবল খেলতে খুব ভালবাসতাম! ছোটবেলায় চাইতাম বড় হয়ে ফুটবলার হবো! কিন্তু হঠাৎ পায়ে আঘাত পাওয়ার কারণে, পেশাগত পর্যায় হিসেবে, খেলাকে বিদায় জানাতে হয়। আমি সুযোগ পেলে এখনও খেলি, ছোট ছোট টুর্নামেন্ট খেলি! পাড়ায় ব্যাডমিন্টন খেলি! ছোটবেলা থেকে বই পড়ার নেশাও ভীষণ ছিল, জীবনবোধ গড়ে তোলার জন্য বই ভীষন গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে ছোটবেলা থেকেই।

৯) খেলার প্রতি তোমার আগ্রহ কিভাবে তৈরি হয়?

  • আমার বাবা ফুটবল কোচিং করাতেন ছোট বাচ্চাদের! সেখান থেকে একটা ইচ্ছা জন্মায়, এছাড়া আমাদের পাড়ায় বাইচুং ভুটিয়া থাকতেন, ছোট থেকেই খুব কাছ থেকে তাঁকে দেখেছি! বাইচুং তখন আমার অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠেন! আমার মনে আছে, ১৯৯৭ সাল নাগাদ, খুব ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে খেলা দেখতে যাই, এবং বাইচুং সেখানে হ্যাট্রিক করেন! সেই দেখে, মানুষের উন্মাদনা দেখে স্থীর করি, হলে ফুটবলারই হবো! (হাসি)

১০) ছাত্র ঋষভের গল্প কেমন ছিল?

  • আমার স্কুলিং শুরু হয়, সেন্ট অগাস্টিন ডে স্কুল থেকে, রিপন স্ট্রীটে! আমি বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক অবধি এগিয়েছি, মা বাবার ইচ্ছে ছিল ইঞ্জিনিয়ার হই, কিন্তু ওপরওয়ালার ইচ্ছে তো অন্যকিছু ছিল! মাস কমিউনিকেশন নিয়ে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক, এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিল্ম স্টাডি নিয়ে স্নাতকোত্তর করেছি।

১১) ইন্ড্রাস্ট্রিতে কিভাবে হাতেখড়ি হয়?

  • ইন্ড্রাস্ট্রিতে আসা আমার ২০১০ সালে, বাংলা সিআইডিতে। আমার এক বন্ধু সহ পরিচালক ছিলেন সেই প্রজেক্টের। তিনিই আমায় এক ফুটবলারের চরিত্রে সেখানে অভিনয় করবার সুযোগ দেন। তারপরে যদিও আর সিরিয়াল করা হয়নি, থিয়েটার নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়ি! তারপরে আবার ফিরে আসা, ২০১৬ সালে অনীক দত্তের 'মেঘনাদবধ রহস্য'তে, সব্যসাচী চক্রবর্তীর ছোটবেলার চরিত্রে! লিড হিসেবে প্রথম সুযোগ আসে, 'কুয়াশা যখন' ছবিতে! কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেটি পরিচিতি পায়নি। ইন্ডাস্ট্রিতে আমি আরও বেশি পরিচিতি লাভ করি, তথাগত মুখার্জীর 'ভটভটি' ছবির টিজার মুক্তির পর।

১২) অভিনয় করতে এসে, অপ্রিয়, তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলে কিভাবে অতিক্রম করো?

  • আমি প্রথম থেকেই বেশ একটি বড় প্রত্যাখ্যানের সম্মুখীন হই! অনেক কিছু সেই কাজটি করার জন্য ছেড়েছিলাম, কিন্তু শেষ অবধি আমার নাম বাদ যায়! নতুন মুখ বলে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়! প্রথম দিকে রাগ হতো, কষ্ট হতো! তারপর মনে হল, আমি 'শিল্পী', আমি 'সেলিব্রিটি' হতে চাইনা! কাজটা সৎ ভাবে করতে চাই! মানুষকে আনন্দ দিতে চাই! দিনের শেষে শিল্প থেকে যায়! দর্শক কখনও উদ্বিগ্ন হবেন না, কোন কাজ করতে গিয়ে আমায় তিক্ততার শিকার হতে হয়! তাঁদের কাছে শিল্পই পৌঁছয় দিনের শেষে! তাই প্রতিভা, আর পরিশ্রমই শেষ কথা বলে, আমার মতে! কোভিডের সময় আমি 'খড়কুটো' বলে একটি সিরিয়াল করেছিলাম, যেখানে আমার চরিত্রটি ছিল, হিন্দু পরিবারের মেয়ের, মুসলিম সন্তানের ভূমিকায়, অর্থাৎ যেখানে আমার মা হিন্দুর চরিত্রে, এবং বাবা মুসলমান! সেখানে আমার চরিত্রটি নিয়ে দর্শক-মহলে ঘাত-প্রতিঘাত সৃষ্টি হয়! আমার চরিত্রটি বাদ যায়! আমি আমার চরিত্র বাদ যাওয়া নিয়ে বিচলিত ছিলাম না, আমি বিচলিত ছিলাম ২০২১-২২ এ দাঁড়িয়ে দর্শক এখনও হিন্দু মুসলমান নিয়ে ভেদাভেদ পোষণ করেন বলে! আমি এই যুগের ভয়ংকরতা নিয়ে বিভ্রান্ত! এটি হাস্যকর যেমন, তেমনই বিষাদের!

১৩) অভিনয়কে কেন্দ্র করে, এমন কোন মুহুর্ত 'উপহার' হিসেবে পেয়েছ, যা মনে থেকে যাবে?

  • হ্যাঁ, এই মুহূর্তে অভিনয়কে ঘিরে 'শ্রেষ্ঠ' মুহুর্ত উপহার হিসেবে পেয়েছি, সেটি হল, 'ভটভটি' করার সময়ের অভিজ্ঞতা! তথাগত মুখার্জী এই মুহূর্তে, আমার কাছে শ্রেষ্ঠ পরিচালক! আমি খুব ভাগ্যবান যে, আমি নতুন পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি! কারণ, যেহেতু আমি নিজেও নতুন, আমি বুঝি নতুনদের একটা খিদে থাকে আলাদা! 'ভটভটি' করার সময় আমি তা বুঝেছি সকলের সঙ্গে, তথা পরিচালকের সঙ্গে মিশে, সকলের অধ্যবসায় দেখে! এই ছবির প্রতি মুহূর্ত আমার কাছে বিশেষ! এমনও হয়েছে, আমরা পুরুলিয়ায় আউটডোর শুটিংয়ে গিয়ে লাঞ্চ করছি, সেই সময়ে আকাশে ডাবল রেনবো দেখা দিলো, তথাগতদা একমুহুর্ত দেরি না করে একটি শট নিয়ে নিলেন ওই মুহূর্তে! আমি এঁটো হাতে দৌড়ে দৌড়ে গিয়ে শট দি! এই অভিজ্ঞতাগুলোই আমার জীবন-শক্তি! এগুলোই অনুভব করায় আমার অভিনয় জীবন সার্থক!

১৪) অবসর সময়ে কিভাবে কাটাও?

  • আমি প্রচুর দেশ বিদেশের সিনেমা দেখি, যেহেতু আমি সিনেমা-প্রেমী! এছাড়া বই পড়া, খেলাধুলো, আমার বিড়ালদের সঙ্গে সময় কাটানো, ছোটবেলা থেকে সিনেমা জগতের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, গান বাজনা, নাটক লেখালেখি, এই সবকিছু নিয়েই আমার অবসর যাপন!

১৫) তোমার অনুগামীদের জন্য কিছু বার্তা-

  • ( হাসি) আমি মনে করিনা, আমার 'অনুগামী' বলে কেউ আছেন, তবুও, আমায় যদি একটু হলেও কেউ ভালোবেসে থাকে, তাঁদের উদ্যেশ্যে বলতে চাই, ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করে যাও প্রতিনিয়ত, পাশের মানুষকে এবং পাশের জীবজন্তুদের সাহায্য করো! রাস্তায় অসহায় জীবজন্তু দেখলে তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াও, গরমে তাদের জলের বন্দোবস্ত করো। ভালো কাজের পাশে থাকো, এমন অনেক কাজ আছে যা প্রচারের আলো ঠিক মত পায়না, তাদের সঙ্গ দেওয়া, বাংলা নাটকের এই দীনতায় উৎসাহ জোগানো, ভালো বই পড়ো এবং সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ হয়ে ওঠা, এইটুকুই চাই!