রেললাইনে কুমীর, প্রায় আধঘণ্টা দাঁড়িয়ে রইল রাজধানী এক্সপ্রেস
মঙ্গলবার ভোররাতে ঘটে ঘটনাটি
যন্ত্রণায় কাতরানো একটি সরীসৃপ দাঁড় করিয়ে রাখল ভারতের সর্বাধিক প্রিমিয়াম সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনকে। মঙ্গলবার ভোররাতে এমনই ঘটনার সাক্ষী রইল ভাদোদরা-মুম্বাই রাজধানী এক্সপ্রেস। তবে শুধু রাজধানীই নয়, আরও একাধিক ট্রেনকে দাঁড় করিয়ে রাখল প্রায় ৮ ফুট লম্বা এক কুমীর।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ভোর ৩টে ১৫ নাগাদ ভাদোদরা-মুম্বাই শাখার কারজান মিয়াগাম স্টেশনের থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে রেললাইনের উপরে আট ফুট লম্বা কুমীরটিকে পড়ে থাকতে দেখেন রেলের এক পেট্রোলম্যান। কোনও এক চলন্ত ট্রেনে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে সেটি রেললাইনের উপরে পড়ে কাতরাচ্ছিল। ঘটনা দেখে তিনি কারজান রেল স্টেশনের সুপারিন্টেনডেন্টকে খবর দেন। তিনি সেই খবর পৌঁছে দেন রেলের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং পশুপ্রেমী হেমন্ত বাধাওানাকে। খবর পেয়েই তিনি তৎক্ষণাৎ ‘অগ্নিবীর প্রাণীন ফাউন্ডেশন’-এর সদস্যা নেহা প্যাটেলকে নিয়ে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। তাঁরা কারজান স্টেশনে পৌঁছে দেখেন, সময়সূচীকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তাঁদের অপেক্ষায় প্রায় ২০ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে আছে খোদ ভাদোদরা থেকে মুম্বাইগামী রাজধানী এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনে চেপেই তাঁরা দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছান। দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েও মিনিট পাঁচেক দাঁড়িয়ে থাকে ভারতের দেশের দ্রুততম রাজধানী। তবে এত চেষ্টা সত্ত্বেও শেষরক্ষা হয়নি কুমিরটির। ঘটনাস্থলেই প্রান হারায় সে।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে নেহা প্যাটেল বলেছেন, তাঁরা যখন দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছান তখন সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন একাধিক রেলকর্মীরা। তখনও কুমীরটি তার চোয়াল নাড়াচ্ছিল। সেখানেই কুমীরটিকে পরীক্ষা করে তাঁরা দেখতে পান, তার মাথায় গভীর চোট লেগেছে। এক কিছুক্ষনের মধ্যেই প্রান হারায় কুমীরটি। কোনও দ্রুতগতির ট্রেনে ধাক্কা লেগেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মোট নেহা প্যাটেলের।
কুমীরের মৃতদেহটি রেললাইনের ধারে সরিয়ে দিলে পুনরায় রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কারজান মিয়াগাম স্টেশনের সুপারিন্টেনডেন্ট সন্তোষ কুমার জানিয়েছেন, “রাজধানী এক্সপ্রেস আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্রেন। তাই আমরা এটিকে কখনও দেরি করাই না। তবে মঙ্গলবার সকালে কুমীরটির প্রান বাঁচানোর তাগিদে আমরা ট্রেনটিকে কিছুক্ষনের জন্য দাঁড় করাতে বাধ্য হই। তবে দুর্ভাগ্যবশত কুমীরটি অত্যধিক আঘাতের জেরে মারা গেছে”। কুমীরটির মৃতদেহ কিষান ট্রেনে চাপিয়ে কারজান মিয়াগাম স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই মৃতদেহটি তুলে দেওয়া হয় বনদপ্তরের হাতে।