সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ভারত-চিনের ১৩ তম বৈঠক
রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে সন্ধে ৭ টা পর্যন্ত ম্যারাথন বৈঠক
রবিবার ভারতীয় সেনা এবং চিনা সেনার মধ্যে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে ১৩ তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হল। পূর্ব লাদাখের লাইন অফ কন্ট্রোলে (LAC) গত প্রায় ১৭ মাস ধরে যেভাবে সেনা মোতায়েন রয়েছে, তারফলে দুই দেশের মধ্যে তীক্ততা ক্রমশ বৃদ্ধি হয়েছে। এমন অবস্থায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সমঝোতার মানসিকতা নিয়ে রবিবার অনুষ্ঠিত হল ১৩ তম বৈঠক। দুই দেশের সেনা কম্যান্ডার পদস্থ আধিকারিকরা সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে সন্ধে ৭ টা পর্যন্ত বৈঠক করেন। লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের চিনা সাইডে মলডো অঞ্চলে এই বৈঠক হয় বলে সূত্রের খবর। প্রায় দু'মাস পর এমন বৈঠক ফের অনুষ্ঠিত হল।
এই বৈঠকে কী আলোচনা হল? সূত্র মারফত খবর, দুই দেশের সীমান্ত প্রদেশে যেভাবে তীক্ততার সম্পর্ক দিনে দিনে বাড়ছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন দুই দেশ। কীভাবে এই সামরিক সমস্যার সমাধান করা যায়, তার রফাসূত্র খোঁজার চেষ্টা চেষ্টা চলছে। জানা গেছে, লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে চিনের পিপলস্ লিবারেশন আর্মি (PLA) প্রচুর সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। পাশাপাশি এইসব অঞ্চলের সামগ্রিক পরিকাঠামো উন্নয়নে অতিরিক্ত গুরুত্ব প্রদান, দুই দেশের সামরিক শান্তি প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে সুখকর নয়। কীভাবে এই পরিস্থিতির সুস্থ সমাধান করা যায় এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশই লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে সেনা মোতায়েন বাড়িয়ে ফেলে। বাড়তে থাকে ঠাণ্ডা যুদ্ধের পরিস্থিতি। মনে করা হয় দু'পক্ষই অন্তত ৫০ হাজার থেকে ৬০ ,হাজার সেনা মোতায়েন শুরু করে। যা অত্যন্ত চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে। বারবার বৈঠকের পরও কোন রফাসূত্র বেরোয়নি। ১৩ তম বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে খবর। ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল মুকুল মুকুন্দ নারাভানে শনিবার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, চিন পিছু না হটলে ভারতের নরম হওয়ার কোন কারণ নেই। শীতের সময়েও যদি সীমান্তে চিনা সেনা মোতায়েন থাকে, লাদাখে পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে।
উল্লেখ্য, এ বছরের ৩১ জুলাই দুই দেশের সেনা কম্যান্ডার আধিকারিকদের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। দীর্ঘ এই ম্যারাথন বৈঠকে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে সেনা মোতায়েন প্রত্যাহার নিয়ে দীর্ঘ সময়ের আলোচনা হয়। তারপরও কোন রফাসূত্র বের হয়নি। বরং যত সময় এগিয়েছে সেনা মোতায়েন, অত্যাধুনিক অস্ত্রের মজুত, ট্যাঙ্ক মিসাইল মোতায়েন ক্রমশ বেড়েছে। যা দুই দেশের সামগ্রিক শান্তি প্রতিস্থাপনের পরিপন্থী। এমন ধারা চলতে থাকলে বরং পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠবে। তাই গতকালের এই দীর্ঘ বৈঠকের পর কোন সমাধান সূত্র তৈরি হয় কী না, তাই এখন দেখার বিষয়।