জঙ্গলরাজ চলছে আফগানিস্তানে। আর তার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে সেখানকার নারীদের উপর। তালিবান উগ্রপন্থীরা যে নারীকে পণ্যর বেশি ভাবে না, তার প্রমান বিশ্ববাসী ২০০১ সাল পর্যন্ত দেখে এসেছে। ২০০১ এর আগে আফগানিস্তানে চলত তালিবানি শাসন। তখনও সেখানের মহিলাদের সমাজের আলো থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল তালিবানিরা। তাঁদের না ছিল পড়াশোনা করার অধিকার, না ছিল চাকরি করার অধিকার। তাঁদের দমিয়ে রাখার জন্য নিষ্ঠুরতাও কম করেনি তারা। কোনও মহিলা তাদের ফতোয়া অগ্রাহ্য করলে তাঁদের কপালে জুটতো চাবুকের বাড়ি। এমনকি আগ্রাসন দেখাতে তাঁদের হত্যা করতে পর্যন্ত কুণ্ঠাবোধ করত না আতঙ্কবাদীর দল। আবার সেই দুর্দিনের কালো মেঘই ঘনিয়ে আসছে আফগানি নারীদের উপর।
তালিবানের পক্ষ্য থেকে আফগানি মহিলাদের উপর আবার একাধিক ফতোয়া জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তাঁরা একারা বাড়ির বাইরে বেরতে পারবেন না। বাইরে বেরতে গেলে তাঁদের সাথে পুরুষ সঙ্গীর বেরনো বাধ্যতামূলক। শুধু তাই নয়, সুত্রের খবর, পুরো পা ঢাকা জুতো না পরলেও তাঁদের কপালে জুটছে তালিবানি জুলুম। উত্তর আফগানিস্থানের তখর প্রদেশ থেকে কাবুলে চলে আসা এক শিক্ষিকার কথায়, পুরনো দিন ফিরিয়ে দিয়েছে তালিবানরা। তাঁর কথায়, কিছুদিন আগেই পুরো পায়ে ঢাকা জুতো না পরার কারনে বেশ কিছু মেয়েকে গাড়ি থেকে জোর করে নামিয়ে তাঁদের চাবুক মারে তালিবান জঙ্গিরা।
প্রসঙ্গত, মে মাসে আমেরিকান সৈন্য প্রত্যাহারের পর থেকেই আফগানিস্থানে নিজেদের অধিকার কায়েম করতে শুরু করে তালিবান জঙ্গিরা। ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুত্তেরেস। সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি বলেন, তালিবানদের দখল করা প্রদেশগুলিতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। জঙ্গিরা বিশেষত মহিলা ও সাংবাদিকদের নিশানা বানাচ্ছে। উল্লেখ্য, বিগত কিছুদিনের মধ্যেই আফগানিস্তানের দুই তৃতীয়াংশ কব্জা করেছে তালিবান। বলাই বাহুল্য, এবার তাদের পরবর্তী নিশানা দেশের রাজধানী কাবুল। তবে ইতিমধ্যেই আফগান সরকার যুদ্ধ রোখার তাগিদে, তালিবানদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগের মাধ্যমে সমঝোতা করতে উদ্যত হয়েছে বলেই সুত্রের খবর।