বাংলায় একটা জনপ্রিয় প্রবাদ রয়েছে,- ‘যে শুয়ে থাকে তার ভাগ্যও শুয়ে থাকে।’ সেই শৈশবকাল থেকে কম বেশি প্রায় প্রত্যেকটি বাঙালী শিশুই পরিবারের বয়জেষ্ঠ্য মানুষদের মুখে এই আপ্ত বাক্য শুনে কান পাকিয়ে ফেলেছে। মূলতঃ জীবনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্যই গুরুজনেরা তাদের সন্তানাদিকে ছোটবেলা থেকেই উক্ত প্রবাদটি শুনিয়ে উদ্বুদ্ধ করতেন। শুধু যে প্রবাদ বাক্য তাই নয় তার সাথে যোগ হতো প্রথাগত শিক্ষা দীক্ষা গ্রহণের উপযোগীতা এবং তার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সরল মতি শিশুদের অবগত করা হতো। মোদ্দা কথা হলো লেখাপড়া, কাজকর্ম না শিখলে জীবনে সর্বাঙ্গীন ভাবে পিছিয়ে পরতে হবে।
এবার এতোদিনের বাঙালীর সব ধ্যাণ ধারণা বদলে দিলো সুদূর ইউরোপ মহাদেশের জার্মানী। সেখানকার হামবার্গে অবস্থিত ফাইন আর্টস বিশ্ববিদ্যালয় একটি গবেষণার আয়োজন করছে। এই গবেষণায়, গবেষকরা এমন সব মানুষদের সন্ধান করছেন যারা সবদিক থেকেই অকর্মা। একটু ভেঙে বললে অলস। তা কারা এই গবেষণায় অংশ গ্রহণ করতে পারেন? জানা গিয়েছে এই গবেষণায় অংশ গ্রহণ করার জন্য ইচ্ছুক তথাকথিত কুঁড়ে ব্যক্তিকে আবেদন করতে হবে। যদি আবেদনপত্র গবেষকদের পছন্দ সই হয় তাহলে আবেদনকারী ব্যক্তি পেয়ে যেতে পারেন ১৬০০ ইউরো (প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা) আর্থিক মূল্যের তিনটির মধ্যে একটি স্কলারশিপ। স্বভাবতই এখন সকলের মনে প্রশ্ন আসবে আবেদনপত্রে কী এমন লেখা যায় যা গবেষকদের সহজেই মন গলাবে। না, সেখানে আবেদনকারী নিজের খুশি মতন বিষয়ে মৌলিক রচনা লিখলে চলবেনা। প্রধানত দুটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে প্রথমত, ‘আপনি কী কী করতে পছন্দ করেননা?’ আর ‘আপনার কাছে এগুলি করার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই কেনো?’
আগামী ১৫ ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদনপত্র জমা দেওয়ার দিন ধার্য হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে মূল গবেষণার আগে পাইলট সার্ভেতে ১২০ জন মানুষের ওপর এই গবেষণা করা হচ্ছে। এই মানুষ গুলিকে মাসিক ১২০০ ইউরো (প্রায় ১ লক্ষ্য ৬ হাজার টাকা) দেওয়া হচ্ছে, এটা দেখার জন্য যে কীভাবে আর্থিক স্থিতি তাদের কাজের ধরণ এবং অবসরের সময়কে নিয়ন্ত্রন করে।