ক্ষমতায় আসার আগে নারীসুরক্ষা, তাঁদের শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রে অগ্রগতির বাণী শুনিয়েছিল তালিবান। কিন্তু ক্ষমতায় এসেই পাল্টি খেয়ে তারা প্রমান করে ফেলল ‘তালিবান আছে তালিবানেই’। যে মুখপাত্র কিছুদিন আগে সাংবাদিক বৈঠক করে দেশের নারীদের সুরক্ষার কথা বলেছিলেন, তাঁর মুখেই আজ অন্য সুর।
মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকে তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ কার্যত স্বীকার করে নিলেন, তালিবানি যোদ্ধারা এখনও নারীদের সম্মান দেওয়ার জন্য 'প্রশিক্ষিত' হয়ে উঠতে পারেনি। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আফগান মহিলারা যেন ঘরেই থাকে। মহিলাদের আপন সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এর দাওয়াইও দেন জাবিউল্লাহ।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আফগানিস্তানে চলেছিল প্রথম তালিবানি শাসন। সেই পাঁচ বছর আফগানি নারীদের জন্য ছিল একটি অন্ধকার অধ্যায়। সে সময় তাঁদের না ছিল চাকরি করার অনুমতি, না ছিল লেখাপড়া করার স্বাধীনতা। ২০০১-এ আমেরিকার সহায়তায় স্বাধীনতার নতুন সূর্য দেখেছিলেন আফগানি মহিলারা। অর্ধদশকের কালো দিনগুলি তাঁরা প্রায় ভুলতে বসেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় বারের জন্য তালিবানের আফগানিস্তান দখলের পর থেকেই পুরনো দুঃস্বপ্নগুলো আবার চাড়া দিয়ে উঠছে সেখানকার সকল বয়সী মহিলাদের মনে। আর তালিবানের তরফ থেকে সর্বশেষ নির্দেশ অনুযায়ী, তাঁদের দুঃস্বপ্নগুলোই সত্য হতে চলেছে আবার। কিছুদিন আগেও তালিবানের মত ছিল ইসলামি নিয়ম মেনে, হিজাব পরে মেয়েরাও যেতে পারবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, জরুরি পরিষেবায় নিযুক্ত কর্মক্ষেত্রে। কিন্তু এখন সেসবেও অনির্দিষ্টকালের জন্য তালা ঝোলাল সদ্য নির্মিত তালিবান সরকার।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই সেখানের নারীদের সুরক্ষার বিষয়ে চিন্তাপ্রকাশ করে আফগানিস্তানকে আর্থিক অনুদান বন্ধ করেছে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক। তার সাথে আফগানিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য ‘স্বচ্ছ এবং দ্রুত তদন্ত’-এর আওয়াজ উঠিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘও। আর এরপরই আফগান মহিলাদের প্রতি এমন নির্দেশ তালিবান শিবিরের।