গতকালই শান্তি বৈঠকে বসেছিলেন রাশিয়া এবং ইউক্রেনের বিদেশ-সচিবরা। মিটিং শেষে জানানো হয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে ওই মিটিংয়ে। কিন্তু শান্তি আলোচনা হয়েছে বলেই যে শান্তি বেছে নেওয়া হয়েছে এমনটা নয়। রাশিয়া সাফ জানিয়েছে, "বৈঠক হচ্ছে মানে এই নয় যে যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়া হবে"।
বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে আক্রমণ তীব্র থেকে তীব্রতর করছে রাশিয়া। রাশিয়ার এই তীব্র আক্রমণে সঙ্গী হয়েছে বেলারুশ। জানা যাচ্ছে, রাশিয়ান আগ্রাসনের কারণে প্রায় ৪০০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রায় সাড়ে ছয় লাখ। ইতিমধ্যেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশ সামরিক বাহিনীকে পরমাণু বোমা প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে জার্মান ব্রিটেনের মত দেশ গুলি অস্ত্র সরবরাহ করে পাশে দাঁড়িয়েছে ইউক্রেনের।
এদিকে অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডা জানিয়েছে তারা সবরকম সামরিক সাহায্য করবে। পাল্টা বেলারুশের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে আমেরিকা। বাইডেনের কড়া নির্দেশ রাশিয়ার সঙ্গ না ছাড়লে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি হবে বেলারুশের উপর। সাম্প্রতিক পোল্যান্ড সফরে ইংল্যান্ডের প্রধান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন অন্যান্য পশ্চিমী দেশ এবং ন্যাটোর সঙ্গে কথা বলে রাশিয়ার ওপর আরো কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপাতে চাইছে তারা।
তবে এসবের মধ্যেই ভারতের জন্য একটি মর্মান্তিক খবর এসে পৌঁছল আজ দুপুরে। জানা গিয়েছে, রুশ বোমার বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছে এক ভারতীয় পড়ুয়া। উত্তর কর্নাটকের বাসিন্দা এই মেডিকেল ছাত্রের নাম নবীন শেখারাপ্পা। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এই খবর জানানো হয়েছে। মৃতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে ভারত সরকারের তরফে। এই প্রসঙ্গে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসাভারাজ বোম্মাই। তিনি এছাড়াও জানিয়েছেন, নবীনের দেহ ফিরিয়ে নিয়ে আনতে সবরকম চেষ্টা করবে ভারত সরকার।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, "ভারতীয় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য কেন্দ্র সরকার ইউক্রেন গভর্মেন্ট এবং পড়শী দেশের সরকারের সাথে কথা বলছে। ইউক্রেনে সব এয়ারপোর্ট বন্ধ হয়ে যাওয়াতে উদ্ধারকাজ চালাতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।"
অন্যদিকে, রাহুল গান্ধী ঘটনার খবর পেয়ে টুইট করে বলেছেন, "ইউক্রেনে এক ভারতীয় ছাত্র নবীনের প্রাণ হারানোর মর্মান্তিক খবর পাওয়া গেছে। তার পরিবার এবং বন্ধুদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। আমি আবার বলছি, নিরাপদ স্থানান্তরের জন্য জিওআই-এর একটি কৌশলগত পরিকল্পনা দরকার। প্রতিটি মিনিট এখন মূল্যবান।" জানা যাচ্ছে, এখনও কয়েক হাজার পড়ুয়া ইউক্রেনে আটকে রয়েছে। আশঙ্কায় দিন গুনছে তাদের পরিবার।