ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিজয়ের কথা মনে রেখে গোটা ভারত বাংলাদেশজুড়ে আজ বৃহস্পতিবার বিজয় দিবস পালন করা হচ্ছে। আসলে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছিল বাংলাদেশের হিন্দুরা। আর তার ফলস্বরূপ ক্ষতবিক্ষত হয়েছে একাধিক হিন্দু মন্দির। সেই তালিকাতেই রয়েছে রমনা কালী বাড়ি। পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজে বারবার গিয়ে মন্দিরগুলিতে আক্রমণ চালিয়েছিল। তারফলে বেশীরভাগ মন্দির ধ্বংসের পথে পা বাড়িয়েছিল।
আজ বৃহস্পতিবার বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন দেশের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সেখানে সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার এই মন্দিরটি সংস্কার করেছে। আগামীকাল সেই রমনা কালী মন্দির উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশ সরকারের এই পদক্ষেপ দেশে বসবাসকারী সংখ্যালঘু হিন্দুদের জন্যই। তাঁরা সম্প্রতি মন্দির ভাঙচুর এবং ধর্মকে নিয়ে ছিনিমিনির ঘটনা চাক্ষুষ করেছে। তার ক্ষতিপূরণ হয়তো এই রমনা কালী মন্দিরের সংস্করণ।
তবে রমনা কালী মন্দির ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? আসলে ১৯৭০ সালে পাকিস্তান নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের উত্থান হয়। তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টির সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংসদ নির্বাচনে জয়ী হন। জয়লাভের পরই মুজিবুর, জুলফিকার আলী ভুট্টোর দলকে তিনি নিশ্চিহ্ন করে দিতে চান। সেই উদ্দেশ্যে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে সেনাবাহিনী পাঠান এবং তখনই ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাক সেনাবাহিনীর রাতে ওই রমনা কালী মন্দিরে আক্রমণ চালায়। নারী শিশুসহ শতাধিক লোক নিহত হয় এবং ওই মন্দির ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। বর্তমানে ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের বিজয় উদযাপন করে। চলতি বছরে রমনা কালী মন্দিরের পুনরুত্থান ধর্মের নামে পাকিস্তানী প্রচারিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করা হবে।