করোনার (Corona Virus) পর কি এবার নয়া আতঙ্ক মাঙ্কিপক্স (Monkeypox)? গত কয়েক দিনের রিপোর্টের পর অন্তত তেমনই আতঙ্কের কথা শোনাচ্ছেন একাংশ। ইতিমধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (WHO) গোটা বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি হয়েছে।
মাঙ্কিপক্সে কারা আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি রিপোর্ট বলছে, সমকামী পুরুষদের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে বেশি। পর্তুগালে এখনও পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪ জন। সে দেশের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আক্রান্তেরা সকলেই পুরুষ। তাঁদের গড় বয়স চল্লিশের নীচে। এছাড়া সমকামী পুরুষদের মধ্যেই দ্রুত ছড়াচ্ছে এই মারণ ভাইরাস।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৭ তারিখ লন্ডনে এক ব্যক্তির শরীরে প্রথম এই ভাইরাসের সন্ধান মেলে। লন্ডনে সংক্রমিত সেই ব্যক্তি সম্প্রতি নাইজেরিয়া থেকে ফিরেছিলেন। মনে করা হয়েছিল, সেখান থেকেই হয়তো এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। এখনও পর্যন্ত ইংল্যান্ডের মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ ছাড়িয়েছে। স্পেনে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮ জনের বেশি। ইংল্যান্ড, পর্তুগাল, স্পেন-সহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে সংক্রমিতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। অতিমারীর আকার ধারণ না করলেও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হু।
ভারতে এখনও পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সের কোন সন্ধান মেলেনি। ভারত সরকারের তরফে কড়া নজরদারির কথা বলা হয়েছে। এরমধ্যেই আইসিএমআর (ICMR) তাদের সাম্প্রতিক গবেষণায় জানিয়েছে, মাঙ্কিপক্সে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। গোটা বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই ভাইরাসের লক্ষণ কী? সাধারণ বসন্তের মতো লক্ষণ তো আছেই অর্থাৎ গায়ে গুটি গজিয়ে ওঠা। জ্বর, গায়ে ব্যথা তো আছেই। গায়ে, হাতে-পায়ে, মুখে বসন্তের মতো বড়বড় গুটি বেরোতে পারে। অনেকটা ফোস্কার মতো সেই গুটি। যন্ত্রণাদায়ক তো বটেই, সঙ্গে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, আক্রান্তদের ১০ শতাংশের পর্যন্ত মৃত্যু হতে পারে। একদিকে করোনার জন্য গোটা বিশ্বে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছে, তার উপর এই নতুন আতঙ্কে কাবু গোটা বিশ্বই।
মাঙ্কিপক্স কি কেবল বাঁদর কিংবা হনুমানের শরীর থেকে ছড়ায়? বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ঠিক তেমন ভাবে বলা সম্ভব নয়। কেবল হনুমান কিংবা বাঁদরের শরীর থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে তেমনটা ভাবা ভুল হবে। মূলত পশুদের কামড় কিংবা আঁচড় থেকে মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে কাঠবিড়ালি, ইঁদুর প্রভৃতি প্রাণীর তীক্ষ্ণ দাঁতের কামড় থেকেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর একটি গবেষণায় উঠে এসেছে মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যৌনমিলনের ফলেও অপর ব্যক্তির শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে।