পূর্বাভাস অনুযায়ী লুইসিয়ানায় রবিবারই আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় ইদা। তবে তার প্রভাব তেমন টের পাননি নিউইয়র্কবাসী। ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড় যত এগিয়েছে বৃষ্টির প্রকোপ তত বেড়েছে। টানা দু-তিন দিনের বৃষ্টি এবং হড়পা বানের জেরে নিউইয়র্ক, নিউজার্সি-সহ বেশ কিছু শহরের অবস্থা ভয়াবহ। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রেকর্ড বৃষ্টির ফলে নিউইয়র্কের অধিকাংশ রাস্তা জলমগ্ন, সাবওয়ে গুলি জলের তলায় আটকা পড়ায় রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। আবহাওয়া ও জলবায়ুর ক্রম পরিবর্তনের ফল এই ঘূর্ণিঝড় বলছেন সেদেশের বিশেষজ্ঞ দল। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ 'ঐতিহাসিক', গত ৫০ বছরে এতবড় দুর্যোগের ঘটনা ঘটেনি বলে সেদেশের বাসিন্দাদের মত।
অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে দেশের বিভিন্ন অংশে অতি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শতাধিক বিমান পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। অধিকাংশ রানওয়ে জলের তলায়। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, "আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। দেশ সাহায্যের সবধরণের ব্যবস্থা করতে প্রস্তুত।" অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে শহরের অধিকাংশ রাস্তা বন্ধ। ফলে উদ্ধারকার্যে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। নিউজার্সির অন্তত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গাড়িতে বন্ধ থাকা অবস্থায়। নিউইয়র্কের মেয়র বিল দ্য ব্লাসিও জানিয়েছেন, "আমরা এক ঐতিহাসিক সময়ে অবস্থান করছি। অতি বৃষ্টির জেরে শহরের অধিকাংশ জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাস্তার অবস্থা বিপজ্জনক।"
নিউইয়র্ক এবং নিউজার্সিতে সতর্কতা জারি হয়েছে। বলা হয়েছে শহরের তুলনামূলক নীচু স্থানগুলি কতটা জলের তলায় তা এখনও পর্যন্ত বোঝা সম্ভব হয়নি। শহরের তুলনায় দরিদ্র মানুষগুলোর অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। সরকার সবধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। সেদেশের আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, এক ঘন্টায় অন্তত ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পেনসিলভ্যানিয়ার অন্তত 98 হাজার বাড়ি, নিউইয়র্কের ৪০ হাজার এবং নিউজার্সির ৬০ হাজারের বেশি বাড়ি বিদ্যুৎ শূন্য। প্রশাসনের তরফে সাধারণ মানুষদের উঁচু কোন স্থানে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। অবিরাম বৃষ্টিপাত ও তুমুল ঝড়ে লন্ডভন্ড গোটা জনজীবন।