আফগানিস্তান তালিবানের দখলে আসার পর থেকেই সারা বিশ্ব জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক। অনেকেই মনে করছেন আফগানিস্তানের মানুষের স্বাধীনতা হরণ করতে উঠে পড়ে লেগেছে তালিবান। অন্যদিকে তালিবানও নিজেদের সুশাসক প্রমাণ করতে বদ্ধপরিকর। আর সেই প্রমাণকার্যে নতুন হাতিয়ার আফগানিস্তানের রাস্তায় টাঙ্গানো সাদা রঙের বেশ কিছু হোডিং এবং পোস্টার। সেগুলির মোটামুটি সব কটিতেই লেখা - আপনাদের স্বাধীন জীবন মোবারক। কোনটায় আবার লেখা, দাসত্বের শেষ এবং স্বাধীনতার শুরু। আবার অন্য একটি পোস্টারে লেখা - 'দেশের শক্তি আমরা। দেশ গড়বো আমরাই।'
গত ২৪ ঘন্টায় কাবুলের রাস্তায় রাস্তায় এই সমস্ত হোর্ডিং ব্যানার এবং পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে। রাস্তায় এদিক-ওদিক তাকালেই দেখা যাচ্ছে তালিবান ওরফে ইসলামিক এমিরেটস অফ আফগানিস্তানের তথ্য এবং সংস্কৃতি মন্ত্রকের বার্তা। তারা জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে, আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসছে নতুন সরকার, যারা আফগানিস্তানের মানুষদের স্বাধীনতার খেয়াল রাখবে এবং তাদের সকলকে সুস্থ রাখবে।
আফগানিস্তানের নাম অভিপ্রায় পরিবর্তন হয়ে গিয়েছ বললেই চলে। বর্তমানে ইসলামিক এমিরেটস অফ আফগানিস্তান হিসেবে পরিচিত হচ্ছে তালিবানি শাসিত আফগান ভূমি। এই সরকারের তথ্য এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় মানে কিন্তু তালিবানের একটি মন্ত্রণালয়। এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানের কোন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি, কোন নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়নি, কিন্তু তাও শুরু হয়ে গিয়েছে পোস্টার ক্যাম্পেইনিং। উদ্দেশ্য একটাই, সকলকে জানিয়ে দেওয়া, আফগান ভূমিতে এখন শুধুমাত্র তালিবানের রাজ। ইতিমধ্যেই, সরকার ঘোষণা না হলেও শুক্রবার সমস্ত তালিবান নেতা কাবুলে এসে পৌঁছেছেন। বেশ কয়েকটি সংবাদ সংস্থা জানিয়ে দিয়েছে মোল্লা বরাদর আফগানিস্তানের নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। পাশাপাশি তালিবান সরকারের শীর্ষ পদে থাকা বেশ কয়েকজন নেতার নাম প্রকাশিত হয়েছে।
এই অবস্থায় নতুন সরকার ঘোষণা না করা হলেও সরকারের নামে নতুন পোস্টার দেওয়া শুরু হয়ে গেছে। তাতে ইতিমধ্যেই মন্ত্রকের করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, তালিবানি শাসন এর তালিবানি সংস্কৃতি নিয়ে যেখানে সব থেকে বেশি চর্চা চলছে সেখানে আবার সংস্কৃতি মন্ত্রক বার্তা দিচ্ছে নাকি, স্বাধীনতা যাপন করার। বলছে নাকি দাসত্ব শেষ হয়েছে। এমনকি বেশ কিছু জায়গায় বেশকিছু দেওয়াল লিখন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। সড়ক লাগোয়া যে সমস্ত দেয়াল লিখন এর মূল বক্তব্য থাকছে, 'মর্যাদা এবং সম্মান রক্ষা আমাদের লক্ষ্য। নতুন সরকার দেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় আনবে।'