গাজা ভূখণ্ডে চলা গত প্রায় ১১ দিনের সংঘর্ষের ইতি টানল ইজরায়েল। উল্লেখ্য, গত কয়েক দিনে ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন সংঘর্ষে অন্তত ২১৭ জন প্যালেস্তাইনি এবং ১২ জন ইজরায়লির মৃত্যু হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলে এই নিয়ে ইজরায়েলের উপর বাড়তি চাপ তৈরি হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার ইজরায়েলের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মন্ত্রীসভার নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে ইজরায়েলের অধিকাংশ সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল। ইজরায়েল সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে কোন মন্তব্য না করলেও রাষ্ট্রপুঞ্জসহ আন্তর্জাতিক মহল এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার আমেরিকার এক প্রথম সারির দৈনিক দাবি করেছিল শীঘ্রই গাজায় শান্তি ফিরতে চলেছে। ইজরায়েলের উপর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই বাড়তি চাপ আসছিল। এমনকী অশান্তি থামানোর আর্জি জানিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জের মুখপাত্র আন্তেনিও গুতেরিস বারবার ইজরায়েলকে সংঘর্ষ বিরতির আবেদন জানিয়ে আসছিল। এমন অবস্থায় ইজরায়েলের উপর তৈরি হওয়া আন্তর্জাতিক চাপ গাজায় শান্তি ফেরানোর রাস্তা অনেকটাই তৈরি হয়েছিল। যদিও ইজরায়েল প্রশাসনের দাবি এই সংঘর্ষে হামাস জঙ্গী সংগঠন লাভবান হচ্ছে। তবে এই সংঘর্ষ বিরতিকে স্বাগত জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। মুখপাত্র আন্তোনিও গুতেরিস বলেছেন, "যুদ্ধবিরতির জন্য আমি উভয়পক্ষের কাছে আবেদন রেখেছিলাম। এই সংঘর্ষ বিরতিকে স্বাগত জানাই। " ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের সভাপতি চার্লস মিচেল এক টুইট বার্তায় বলেছেন, "ইজরায়েল এবং হামাসের ১১ দিনের সংঘর্ষ বিরতিকে স্বাগত জানাই। সাধারণ মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরে আসুক।"
পশ্চিম এশিয়ার অধিকাংশ দেশ এই সংঘর্ষ বিরতির পক্ষে মতদান করেছিল। পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় এই নিয়ে আলোচনা হওয়ায় বাড়তি চাপ তৈরি হয় ইজরায়েলের উপর। অবশেষে মিশরের মধ্যস্থতায় এই সংঘর্ষ বিরতিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন আমেরিকার প্রশাসন। আমেরিকার সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্তোনি ব্লিংকেন জানিয়েছেন, মিশরের মধ্যস্থতায় ইজরায়েল আর্মি ফোর্সের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা সংঘর্ষ বিরতিতে সম্মতি জানিয়েছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এই সব ভূখণ্ডে গিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরণের ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন ধরে শি চিনফিং সরকার গাজা ভূখণ্ডে শান্তি ফেরাতে তৎপর হয়ে উঠেছিল। তাদের দাবি হামাস জঙ্গী সঙ্গে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির চুক্তি অযৌক্তিক নয়।
গাজা ভূখণ্ডের সংঘর্ষের আঁচ ইতিমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছিল। নিউইয়র্কের রাস্তায় ইজরায়েলি ও প্যালেস্তাইনি বংশোদ্ভূতের হাতাহাতির ভিডিও ইতিমধ্যেই স্যোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এই সংঘর্ষ বিরতিতে আমেরিকার প্রশাসন গাজা ভূখণ্ডকে পুনরায় গড়ে তুলতে সব ধরণের সাহায্যের ঘোষণা করেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জেরসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংগঠনের কাছে আবেদন জানানোর কথা বলেছেন বাইডেন সরকার।