তিনি পৃথিবীর ধনীতম ব্যক্তি। তিনি অ্যামাজনের (Amazon) প্রতিষ্ঠাতা। যিনি দু'দশক আগেও স্বপ্ন দেখতেন পৃথিবীর বাইরে উপনিবেশ তৈরি করার, পৃথিবীর ভরকেন্দ্র ছাড়িয়ে মহাশূন্যে নিজের আধিপত্য বিস্তার করার। সেই মানুষটি জেফ বেজোস (Jeff Bezos)। ৫৭ বছরে পাড়ি দিয়েছিলেন পৃথিবী ও মহাকাশের সীমান্ত রেখায়। ছিলেন প্রায় ১০ মিনিট ২০ সেকেন্ড। নিজের তৈরি মহাকাশযানে সফর করলেন সেখানে, যেখানে মানুষ পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭ টা নাগাদ টেক্সাসের মরুশহর থেকে শুরু হয় বেজোসের মহাকাশ যাত্রা। নিজের সংস্থা 'ব্লু অরিজিন'-এর তৈরি 'নিউ শেপার্ড'-এ চড়ে পাড়ি দিলেন পৃথিবী ও মহাকাশের দিগন্ত রেখায়। সঙ্গী ছিলেন নিজের ভাইসহ তিন জন সহযাত্রী। এই প্রথম রেকর্ড তৈরি হল। বিশ্বের প্রবীণতম মহাকাশচারী প্রাক্তন বিমানচালক ওয়ালি ফ্রাঙ্ক হলেন বেজোসের সফর সঙ্গী। সেই সঙ্গে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ মহাকাশচারী হিসেবে অলিভার ডিমেন নামে ১৮ বছরের এক কিশোর সাক্ষী থাকলেন বেজোসের এই কৃতিত্বে। বিশ্বের ধনী ব্যক্তির ঝুলিতে এল নতুন এক সফলতার নিদর্শন।
দিন কয়েক আগেই পাড়ি দিয়েছিলেন ব্রিটিশ ধনকুবের রিচার্ড ব্র্যানসন। মহাকাশ পর্যটন শিল্পের সূত্রপাত হয়তো তাঁর হাত ধরেই। আর অ্যামাজন কর্তা জেফ বেজোসের মহাকাশ অভিযানের পর সেই বার্তা আরও পাকাপোক্ত হল। রিচার্ড ব্র্যানসন পৃথিবী থেকে ৮০ কিলোমিটার উপরে পাড়ি দিয়েছিলেন। আর জেফ বেজোস তাঁকে ছাড়িয়ে ১০০ কিলোমিটার উপরে কাটিয়ে নির্বিঘ্নে পৃথিবীতে ফিরে এলেন। তাহলে কি এরপর থেকেই মহাকাশ অভিযান বাণিজ্যিক ভাবেই শুরু হবে? মহাকাশে কি উপনিবেশ স্থাপনের সূত্রপাত শুরু হয়ে গেল? এই প্রশ্নগুলোই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সবমহলে।
মহাকাশ থেকে ফিরে এসে কী বললেন বেজোস? মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে কেমন দেখায়, তাই ব্যক্ত করেছেন তিনি। সেই অনিন্দ্য সুন্দর দৃশ্য চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। ফিরে এসেই তিনি বলেছেন, "শুধুমাত্র আমি নয়, প্রত্যেক মহাকাশচারী মহাকাশ থেকে পৃথিবীর সৌন্দর্য মায়ায় মুগ্ধ। যা দেখে সবাই একপ্রকার বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পড়েছিলেন।" কিছুদিন আগেই ব্রিটিশ ধনকুবের রিচার্ড ব্র্যানসন মহাকাশ সফর সফলতার সঙ্গে শেষ করেছেন। তিনি বেজোসের এই সাফল্যে ব্লু অরিজিনের সকলকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। টিমের সকলকে শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন। পরপর এই ব্যক্তিগত উদ্যোগে সফল এই মহাকাশ অভিযানের পর মহাকাশে উপনিবেশ স্থাপনের ইচ্ছের একধাপ এগোলো মনে করছেন একাংশ।