গত বছরের শুরুর দিক থেকে গোটা বিশ্বজুড়ে অব্যাহত রয়েছে করোনার চোখরাঙানি। চলতি বছরে টিকাকরণ শুরু হওয়াতে বেশিরভাগ জায়গায় করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলেও, বর্তমানে হু হু করে সংক্রমণ বাড়ছে জার্মানিতে। তৃতীয় ঢেউয়ের পর এবার জার্মানিতে চতুর্থ ঢেউয়ের আশঙ্কা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। জার্মানির আগামী কিছুদিনের ভবিষ্যৎ যে খুবই ভয়াবহ হতে পারে তার আশঙ্কায় আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে প্রশাসন। জার্মানির ইউনিভার্সিটি হসপিটাল অফ গিসেনে উপচে পড়ছে রোগী। ধারণক্ষমতার তিনগুণ রোগী ভর্তি হয়েছেন সেখানে। ভয় ধরানোর মতো তথ্য হল তাদের আবার অর্ধেকের বেশিই ভেন্টিলেটরে ভর্তি। এই প্রসঙ্গে কিছুদিন আগে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল জানিয়েছেন, "দেশের বুকে যদি চতুর্থ ঢেউ আছড়ে পড়ে তার জন্য একমাত্র দায়ী সেইসমস্ত নাগরিক যারা এখনও অব্দি ভ্যাকসিন নেয়নি। সমস্ত দেশবাসীকে দ্রুত ভ্যাকসিন নেওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।"
চলতি সপ্তাহে ইউরোপের সবচেয়ে বেশি জনবহুল দেশ জার্মানিতে করোনার সংক্রমণ রেকর্ড গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধুমাত্র আজ অর্থাৎ সোমবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৬৪৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬২ জনের। সংক্রমনের শুরুর থেকে হিসাব করলে জার্মানিতে মোট ৫.৩ মিলিয়ন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ মানুষ এই রোগে প্রাণ হারিয়েছেন। এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝে জার্মানিতে চতুর্থ ঢেউ আছড়ে পড়লে যে মৃত্যুমিছিল লেগে যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে অবাক করা বিষয় এটি যে জার্মানিতে দীর্ঘদিন টিকাকরণ ব্যবস্থা চালু হলেও এখনও অব্দি মাত্র দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এই পরিসংখ্যান বিচার করলে জার্মানিতে করোনার চতুর্থ ঢেউ নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন হবে।
জার্মানির করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেন্স স্পাহান বলেছেন, "চলতি বছরে শীতের শেষে জার্মানরা নয়তো টিকা নিয়ে বেঁচে থাকবেন বা প্রাণ হারাবেন। অতি সংক্রামক ডেল্টা ভেরিয়েন্ট জার্মানির বুকে আবারও মৃত্যুমিছিল শুরু করতে পারে। যারা এখনও ভ্যাকসিন নেয়নি, তারা অতি শীঘ্রই ভ্যাকসিন নিয়ে নিন।" প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে সমস্ত মানুষকে ওয়াক ফ্রম হোমে কাজ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া গণপরিবহন এবং অন্যান্য জায়গায় প্রবেশের জন্য ভ্যাকসিনেশন সার্টিফিকেট দেখাতে হচ্ছে।