শর্তসাপেক্ষে শান্তি আলোচনার জন্য তৈরি ন্যাশনাল রেজিট্যান্স ফ্রন্ট অফ আফগানিস্তান (NRFA) দলের প্রধান আহমেদ মাসুদ (Ahmad Massoud)। তাঁর তরফে জানানো হয়েছে, পঞ্চশির প্রদেশ-সহ পাশাপাশি আন্দারব থেকে তালিবান সেনা সরিয়ে নিলে এবং পরবর্তী আর আক্রমণ নয় এই কথা গ্রহণ করলে তবেই মাসুদ বাহিনী আলোচনায় বসতে রাজি। এমনকী এই আলোচনার পরেই দু'পক্ষের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হতে পারে, তবে সবটাই নির্ভর করছে তালিবানের শর্তসাপেক্ষে শান্তিপূর্ণ চুক্তির উপর। রবিবার নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের অন্যতম প্রধান আহমেদ মাসুদ এমন কথা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ অগাস্ট তালিব সেনার কাবুল দখল এবং আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আসরফ ঘানির দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে সেদেশে তালিবানি শাসন কায়েম হয়ে যায়। কেবল আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা দখলের কার্যক্রমটুকু বাকি। এরমধ্যে আফগানিস্তানের অধিকাংশ জায়গা তালিবানদের দখলে এলেও পঞ্চশির প্রদেশ এবং তার পাশাপাশি আন্দারব এলাকা এখনও তালিবানদের আওতায় আসতে পারেনি। বিরোধী পক্ষের আহমেদ মাসুদ এবং দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ্ তাঁদের যৌথ তৎপরতায় এখনও পর্যন্ত এই দুটি অঞ্চল তালিবানি শাসনমুক্ত। তালিবান সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও বারবার ব্যর্থ। কিন্তু এই সংঘর্ষের ফলে দু'পক্ষের সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অন্তত এক হাজারের বেশি তালিব সেনা এই মাসুদ বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন বলে সূত্রের খবর। ক্রমাগত আক্রমণ এবং প্রতি আক্রমণে দু'পক্ষের বহুল ক্ষতির আশঙ্কা। তবে এবার মাসুদ বাহিনীর পক্ষ থেকে শর্তসাপেক্ষে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এসেছে, যদিও তালিবানদের পক্ষ থেকে কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
অন্যদিকে, পঞ্চশিরে তালিবানদের সঙ্গে লড়াইয়ে আহমেদ মাসুদের অন্যতম মুখপাত্র ফাহিম দাস্তির মৃত্যু হয়েছে বলে সূত্রের খবর। 'ন্যাশনাল রেজিট্যান্স ফ্রন্ট অফ আফগানিস্তান' নামক ফেসবুক পেজে এই মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। এমনকী তাঁকে 'শহীদ' তকমা দেওয়া হয়েছে মাসুদ বাহিনীর পক্ষ থেকে। কেবল ফাহিম দাস্তি নয়, মাসুদ বাহিনীর আরও চারজন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কর্তার মৃত্যুর খবরও এসেছে। এই ফাহিম গতমাসে জানিয়েছিলেন, "আমরা কেবল পঞ্চশির প্রদেশের জন্য লড়াই করছি না। এ লড়াই সমগ্র আফগানিস্তানের জন্য। আমরা আফগান মহিলা, সংখ্যালঘুদের জন্য উদ্বিগ্ন। তালিবানকে এদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে।" তালিবানদের ক্রমাগত আক্রমণের পরেও মাসুদ বাহিনী তাদের আটকে রেখেছে। অবশ্য শর্তসাপেক্ষে এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তালিবানরা কীভাবে গ্রহণ করেন, তা সময়ই বলবে।