‘শেষের সে দিন ভয়ঙ্কর!’
২০১৩ সালে শেষ জলবায়ুর পরিবর্তন সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করেছিল রাষ্ট্রসঙ্ঘ। আবার তাঁরা জলবায়ু পরিবর্তনের নতুন রিপোর্ট দিলেন ২০২১ এ। তবে এই রিপোর্ট দেখে আমার আপনার ঘুম উড়তেই পারে। কিন্তু কি এমন লেখা ছিল ঐ রিপোর্টে? তাতে স্পষ্ট লেখা আছে, পৃথিবী ক্রমশ এক মহা বিপর্যয়ের দিকে এগোচ্ছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই চরম বিপর্যয়য়েরই আগাম পূর্বাভাস বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, তা সে ভারতে সুপার সাইক্লোন আছড়ে পড়াই হোক বা অস্ট্রেলিয়া/ গ্রিসে বিধ্বংসী দাবানল।
তবে এই রিপোর্ট থেকে ভয়ঙ্করতম যে তথ্যটি উঠে এসছে তা হল, পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে, এবং তা বাড়ছে দ্রুততার সঙ্গে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, আগামী দু’দশকে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বাড়তে পারে প্রায় ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আর যা নিয়ে কার্যত শঙ্কিত বিজ্ঞানী থেকে বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, বিগত দু’সপ্তাহ ধরে ১৯৫টি দেশের বিশেষজ্ঞদের যৌথ উদ্যোগের ফল এই রিপোর্ট। জাতিসঙ্ঘের আওতাভুক্ত সমস্ত দেশের থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ২৬শে জুলাই থেকে ভার্চুয়ালি আলোচনা শুরু করেন তাঁরা। তাঁদের আলোচনার ভিত্তিতেই এই রিপোর্টটি তৈরি হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই তাপমাত্রার পরিবর্তন সরাসরি প্রকৃতি ও মানবজীবনে প্রভাব বিস্তার করবে। বিশ্বজুড়ে গ্রীষ্মকালের স্থায়িত্ব বাড়বে, কমবে শীতের সময়কাল। শুধু তাই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন অংশ প্রত্যক্ষ করবে চরম আবহাওয়ার, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। তার ফলে গরমে বাড়বে গরম, শীতকালে বাড়বে ঠাণ্ডা। কোনোস্থানে বর্ষাকালে হবে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত, তো কোনোখানে বছরভর খরার সম্মুখীন হবে বিশ্ববাসী। শুধু তাই নয়, আরও এক আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে এই রিপোর্ট। বলা হয়েছে, সমগ্র একবিংশ শতক জুড়েই বিশ্বব্যাপী সমুদ্রের জলস্তর বাড়তে থাকবে। যার জেরে বাড়বে বন্যা। বিশ্বউষ্ণায়নের চরমতম নিদর্শনের সাক্ষী থাকবে একবিংশ শতাব্দী। তবে এর পরিস্থিতির পিছনে মানুষ এবং তার জীবনশৈলীকেই দায়ি করেছে বিশেষজ্ঞমহল। প্রসঙ্গত, বিশ্বউষ্ণায়নে রাশ টানার জন্য ১৯৯৭ সালের ১১ই ডিসেম্বর ইউএনএফসিসিসি-র তরফ থেকে জাপানের কিয়োটো শহরে কিয়োটো প্রোটোকল গ্রহন করা হয়েছিল, যা ২০০৫ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হয়। এই প্রোটোকলে ৩৭ টি শিল্পোন্নত দেশ গ্রিনহাউস গ্যাসের উৎপাদনে রাশ টানার জন্য সাক্ষর করে।