ভবিষ্যতে মানব সভ্যতাকে নিরাপদ রাখার জন্য মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মঙ্গল গ্রহে উপনিবেশ স্থাপন করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বহু আগে থেকেই। কারণ, বর্তমানে পৃথিবীর উপযোগী আবহাওয়া ও জলবায়ুর বিবেচনায় সৌরজগতের সব থেকে কাঙ্ক্ষিত গ্রহ 'মঙ্গল'।
কাজেই, সেখানেই নজর মহাকাশ বিজ্ঞানীদের। আর তার জেরেই মিলছে একের পর এক তথ্য। ইতিমধ্যেই ১৯৭৬ সালে মঙ্গলে ভাইকিং অভিযান পরিচালনা করে, নাসা সূত্রে খবর মিলেছিল মঙ্গলে জলের অস্তিত্ব। এরপরেই, মানুষ বিহীন রোভার মঙ্গল গ্রহের গবেষণাকে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। তবে ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো নাসার রোভার ‘কিউরিসিটি’কে মঙ্গলে পাঠানো হতে, তা একটি খাদে ল্যান্ড করে।
এরপরেও একের পর এক রোভার ক্রমশ প্রবেশ করেছে মঙ্গলে। তবে সর্বশেষ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মহাকাশযান ‘পারসিভিয়ারেন্স’ নিরাপদে মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে অবতরণ করেছে। কাজেই, সাফল্যের পথে নাসা। এটা অনেকটা চ্যালেঞ্জিং থাকলেও, সফল ভাবে রোভারের অবতরণের পর উচ্ছ্বসিত নাসা।
জানা যাচ্ছে, 'পারসিভিয়ারেন্স' জেজিরো নামের বিশেষ একটি খাদে সফল ভাবে অবতরণ করেছে। মঙ্গলে পাঠানো সমস্ত যানের মধ্যে, এটি নাসার সর্বাধুনিক যান। কাজেই, রোভারটিতে সাতফুট লম্বা রোবটিক হাত, ১৯টি ক্যামেরা, দুটি মাইক্রোফোন, একটি ল্যান্ডার ভিশন সিস্টেম রয়েছে। এছাড়াও এই মঙ্গলযানে রিয়েল টাইম ছবি তুলে রাখার স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র রয়েছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, আগামী দুই বছর ছয় চাকার এই রোবটটি মঙ্গলে থেকে, মঙ্গলের প্রাচীন হ্রদ এবং এলাকার মাটি ও পাথরের মধ্যে খনন চালিয়ে মঙ্গলে অতীত অণুজীবের অস্তিত্ব সন্ধানের প্রচেষ্টা চালাবে। শুধু তাই নয়, মঙ্গলে হেলিকপ্টার চালানো সম্ভব কিনা, সেটি পরীক্ষা করার জন্য রোবটটির সঙ্গে হেলিকপ্টার রয়েছে। যার জেরে বোঝা সম্ভব হবে, মঙ্গলে হেলিকপ্টার চলতে সক্ষম কিনা।
তবে মঙ্গলগ্রহে অবতরণের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবন্ধকতা হল, মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠের বায়ুমণ্ডলীয় চাপ পৃথিবীর প্রায় ১%। অন্যদিকে, মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে ৯৫ শতাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড মিশ্রিত। তাই পারসিভিয়ারেন্সে একটি যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে, যা কার্বন ডাই-অক্সাইডকে অক্সিজেনে রূপান্তর করতে সক্ষম।