’২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে প্রায় হোয়াইটওয়াশ করার পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের চোখে দেখা গেছে কেন্দ্র দখলের আগ্রাসী মনোভাব। তাঁরা যে কেবলমাত্র খাতায় কলমেই সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল হয়ে থাকতে চান না তার ইঙ্গিত দিয়েছেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো। আর সর্বভারতীয় স্তরে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেস প্রথম নিশানা হিসেবে বেছে নিয়েছে অপর এক বাংলাভাষী রাজ্য ত্রিপুরাকে। তবে ত্রিপুরায় ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে দুই রাজ্যের মধ্যে গোড়া থেকেই শুরু হয়েছে সংঘাত। যা কেবলমাত্র বাক্যবাণে সীমাবদ্ধ না থেকে ত্রিপুরায় বাংলার তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতারী পর্যন্ত গড়িয়েছে। তবে ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যে বিপ্লব দেব সরকারের ভিত নাড়াতে শুরু করে দিয়েছে তা এই রাজ্য ও ত্রিপুরার বিজেপি নেতাকর্মীদের হাবভাবে স্পষ্ট। শয়ে শয়ে ত্রিপুরার বিজেপি নেতা-কর্মীরা এই কদিনে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। তবে এখানেই শেষ নয়, আরও অনেকে আসবে বলেই দাবী তৃণমূল নেতৃত্বের। আর সেই দাবীতে কার্যত সিলমোহর বসিয়ে এবার কলকাতায় ত্রিপুরার বেশ কিছু বিজেপি বিধায়ক।
সুত্রের খবর, শুক্রবারই তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে বিজেপি বিধায়কদের দেখা করার সম্ভাবনা প্রবল। যদিও আগত বিজেপি বিধায়কের সংখ্যা নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি তৃণমূল, তবে তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, যে ভাবে ত্রিপুরার বিজেপিতে ‘ভাঙন’ ধরেছে, তাতে সেখানে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানো এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
তৃণমূল নেতৃত্বের কথায়, ত্রিপুরার বহু বিধায়ক সেখানের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের কট্টর বিরোধী। আর কিছু বিধায়ক রয়েছেন, যারা বিপ্লব দেবকে সমর্থন করেন। তবে এখন দলবদলের হিড়িক আর তাঁদের প্রতি মানুষের অবিশ্বাস দেখে তাঁরাও অতল জলে পড়েছেন। সেই কারনে বিজেপির গুড বুকে থাকা নেতারাও নিজেদের প্রতিনিধি পাঠাচ্ছেন তৃনমূলের কাছে। কংগ্রেস নেতা সুবল ভৌমিক ইতিমধ্যেই নাম লিখিয়েছেন তৃণমূল শিবিরে। ত্রিপুরার প্রাক্তন অধ্যক্ষ এবং পাঁচ বারের বিধায়ক জিতেন সরকারও তৃণমূলে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে তৃণমূল রাজ্যসভা সদস্য শান্তনু সেন ত্রিপুরা বিজেপির সহ সভাপতি অশোক দেববর্মার সাথে সাক্ষাৎ করেছে। তাই এখন ত্রিপুরায় দলবদলের হাওয়া যে তৃনমূলের পালেই, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
যদিও বিজেপি নেতৃত্ব এর মাঝেও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। তাঁদের কথায়, মাইনাস থেকে শুরু করে এবার শূন্যে গিয়ে ঠেকবে তৃণমূল।