এবার বিজেপির বিরুদ্ধে উঠল নিজের দলের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ। ভোট পরবর্তী খরচ খরচা নিয়ে যখন কেন্দ্রীয় কমিটি হিসাব করতে ব্যস্ত, তখন একেবারে মাথায় হাত কেন্দ্রীয় বিজেপির। হিসাব অনুযায়ী দক্ষিণ কলকাতার তিনটি তারকাখচিত কেন্দ্রে শুধুমাত্র ভোট প্রচার করতে খরচ করা হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৪ কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে মাত্র তিনটি কেন্দ্রের প্রচার করার জন্য। এই তিনটি কেন্দ্র হল ভবানীপুর, বেহালা পূর্ব এবং বেহালা পশ্চিম। প্রার্থীরা হলেন যথাক্রমে রুদ্রনীল ঘোষ, পায়েল সরকার এবং শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। নির্বাচনের দুমাস আগে থেকে দলের কেন্দ্রীয় কোষাগার থেকে রাজ্যের নেতাদের হাতে টাকা দেওয়া হয়েছিল। সেই টাকার হিসাব কষতে বসায় এবারে এত বড় গোলমাল চোখে পড়ল কেন্দ্রীয় বিজেপির।
তাদের অভিযোগ, ভোট প্রচারের জন্য যত্সামান্য টাকা খরচ করে বাকি টাকা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ব্যাগে পুরে চম্পট দিয়েছেন। তাই এবারে এই টাকার ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে এবারে আসলেন রাজ্যের নেতারা। রাজ্য বিজেপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা ওই টাকার একটি খসড়া হিসাব দিলেন। তিনি জানালেন, ওই তিনটি কেন্দ্রের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের রোড শো এর জন্য ১৫ লক্ষ টাকা করে খরচ হয়েছে। প্রত্যেকটি বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন এর জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে এবং ভোটের দিন ১২৬৪ টি বুথের প্রত্যেক বুথ কর্মীর হাতে দেওয়া হয়েছে ৪,০০০ টাকা করে। এছাড়াও কনভেনর, মণ্ডল সভাপতি, জেলা কমিটির সদস্য এবং একাধিক নেতাদের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ হয়েছিল। প্রতিটি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ভিন রাজ্যে নেতাদের হোটেল, খাওয়া-দাওয়া, গাড়ি এবং সমস্ত কিছু খরচের জন্য মাসে ২ লক্ষ টাকার বেশি খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এখানেই থেমে নেই, বেহালা পূর্ব এবং বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রের জন্য ৬০ হাজার টাকা খরচ করে দুটি বিয়ে বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল শুধুমাত্র নির্বাচনী অফিস তৈরি করার জন্য। এছাড়াও রয়েছে পথসভা, ছোট ছোট জনসভা সমস্ত কিছুর জন্য ২ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মতো খরচ। প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রার্থী জনসংযোগের জন্য ৫ লক্ষ টাকা করে খরচ হয়েছে এবং কর্মীদের খাওয়া-দাওয়া বাবদ মাসিক দেড় লক্ষ টাকা করে খরচ করা হয়েছে বিজেপির তরফ থেকে। কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতাদের এটাই সমস্যা এত কিছু খরচ করার পরেও এই তিনটি কেন্দ্রে অত্যন্ত শোচনীয় ভাবে পরাজয় স্বীকার করতে হয়েছে বিজেপিকে। রুদ্রনীল ঘোষ অবশ্য নিজের উপর থেকে সমস্ত দায় সরিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু পায়েল সরকার এবং শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে বারংবার ফোন করা হলেও তাদের তরফ থেকে কোন রিপ্লাই আসেনি।