বিগত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিডিউল অনেকটাই আলাদা। নির্বাচনী প্রচারের থেকেও বেশি ব্যস্ততায় কাটছে তাঁর দিন। ‘জয়ন্তী মঙ্গলা কালী……’ স্ত্রোত্র আউড়ে অক্লান্তভাবে একের পর এক পুজা মণ্ডপের উদ্বোধন করছেন বাংলার ‘দিদি’। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আর পাড়ার মেয়েতে যে ফারাক বিস্তর, তা এদিন প্রমান করল ভবানীপুর ৭৬ পল্লী। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির অদুরেই এই পুজার উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী হাজির হতেই তাঁর দিকে ধেয়ে এলো চায়ের ‘অফার’। আর অপ্রত্যাশিত এই অর্পণে বেজায় খুশি মমতা। যদিও আনন্দের মাঝেও আক্ষেপের সুর শোনা গেল এদিন তাঁর গলায়। কারন, অন্য কেউ যে তাঁকে চায়ের জন্য একবারও ‘সাধেনি’! অন্য মণ্ডপে উদ্বোধন করতে গিয়ে চা না পাওয়ার আক্ষেপ উগড়েও দিলেন ‘স্পষ্টবক্তা’ মুখ্যমন্ত্রী।
শনিবার ভবানিপুর ৭৬ পল্লীতে পুজা উদ্বোধনে গেলে মুখ্যমন্ত্রীকে চা খাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় পুজা কমিটির তরফ থেকে। প্রস্তাব সানন্দে গ্রহন করে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘এতগুলো পুজো উদ্বোধন করলাম, কেউ এক কাপ চা দেয়নি। আজকে এরা আমায় এক কাপ চা দেবে বলেছে। আমি খুব খুশি’। সাথে তাঁর সংযুক্তি, ‘আমার গলা শুকিয়ে গিয়েছে। অন্তত ১০০ টি প্যান্ডেল ঘোরা হয়ে গেল। কাল অনেকে চা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু একটা জায়গায় খেয়েছিলাম। পরশু আমাকে কেউ দেয়নি। ওদের দোষ নেই। আমি সময় পাই না। আজকে তোমরা চা দিয়েছ। এটা আমার নিজের পাড়া। নিজের পাড়ার মেয়ে হিসেবে চেয়ে খাচ্ছি’।
তবে আগের উদ্বোধনগুলিতে মুখ্যমন্ত্রীর চা না পাওয়ার এই ঘটনায় কার্যত অস্বস্তির মুখে পড়েছেন তাঁরই শিবিরের বেশ কিছু নেতা-মন্ত্রী। কারন, তাঁদেরও প্যান্ডেলে যে উদ্বোধনে গেছিলেন ‘দিদি’। তখন তো চায়ের অফার অধরাই থেকে গেছে। আর চা আর তেলেভাজা প্রেমী মুখ্যমন্ত্রীকে পুজোর উদ্বোধনে তাঁর পছন্দের খাবার খেতে বললে হয়ত জনসমক্ষে এমন অস্বস্তিতে পড়তে হত না তাঁদের। তবে যাই হোক, শেষমেশ ‘পছন্দের’ চা পেলেন তিনি। তাও আবার ‘ঘর হতে বারে দুই পা ফেলিয়া, একটি ধানের শিষের উপর একটি শিশিরবিন্দু’র মতোই!