গত মাসের শেষের দিকে দেবাঞ্জন দেবের কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ড (Kasba Fake Vaccination campaign) নিয়ে বঙ্গ রাজনীতি তোলপাড় হয়েছিল। যাদবপুরের সাংসদ মিমি চক্রবর্তী ভ্যাকসিন ক্যাম্প থেকে টিকা নেওয়ার পর ম্যাসেজ না আসায় প্রথমে সন্দেহ হয় এবং পরে ঘটনাটি বিশ্লেষণ করে জানা যায় দেবাঞ্জন দেব প্রতারণার পাহাড় তৈরি করেছে। একাধিক ক্ষেত্রে দেবাঞ্জনের প্রতারণার কীর্তিকলাপ সামনে আসতেই বিজেপি (BJP) বিভিন্ন ছবি প্রকাশ করে দাবি করেন যে রাজ্যের নেতা মন্ত্রীরা দেবাঞ্জন দেবের সাথে রয়েছেন। তারা ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করে। গেরুয়া শিবির অভিযোগ জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠিও পাঠায়। এরপর আজ অর্থাৎ সোমবার গেরুয়া শিবির কসবার ভ্যাকসিন কাণ্ডের প্রতিবাদে পুরসভা অভিযান করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে প্রথম থেকেই করোনা পরিস্থিতিতে মিছিলের অনুমতি দেয়নি কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। গতকালই বিজেপি মহামারী আইন অমান্য করে মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।
আজ সকালে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে মিছিল শুরু হয়। তাদের ওয়েলিংটন স্কোয়ার থেকে এস এন ব্যানার্জি রোড ধরে মিছিল নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কলকাতা পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য তারা হঠাৎই রুট বদল করে গনেশ চন্দ্র এভিনিউ ধরে এগোতে থাকেন। কিন্তু পুলিশকে বোকা বানানোর চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। সেন্ট্রাল এভিনিউতে মিছিল আটকায় পুলিশ। প্রশাসনের বাধা অগ্রাহ্য করে মিছিল নিয়ে এগোতে গেলে কলকাতা পুলিশের সাথে গেরুয়া নেতাকর্মীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। এরপরই কলকাতা পুলিশ একের পর এক শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতা যেমন সায়ন্তন বসু, অগ্নিমিত্রা পাল প্রমুখদের গ্রেফতার করে।
এই প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, "জোরজবরদস্তি করে বিধায়কদের ভ্যানে তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে। নতুন সরকার এসেছে। দুমাস হয়েছে সবে। আমরা চেয়েছিলাম সরকার ঠিক করে কাজ করুক। করোনা পরিস্থিতি সামলে রাজ্যকে সুস্থ করে তুলুক। কিন্তু দু'মাসের মধ্যেই আইনশৃংখলার চরম অবনতি হয়েছে। ৪৫ জন খুন হয়েছে। খাস কলকাতায় টাকা নিয়ে ভ্যাকসিন বিক্রি করার রাজনীতি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জন্য কোন ব্যবস্থা নেই। তাই অজ্ঞতা আমরা রাস্তায় নেমেছি। জাল ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। আমরা আজ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলাম। কিন্তু কর্মসূচি শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের ৫০ জন লোককে গ্রেফতার করে বাসে তুলে নিয়ে চলে গেল। মানুষ ওদের পক্ষে রায় দেবে। সরকার প্রথম থেকেই চালাকি করছে। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করতে হবে। না হলে আমরা আবারও প্রতিবাদে রাস্তায় নামবো।"