বিতর্ক তৈরি হয়েছিল এক টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকের অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ায়। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন কবীর সুমন (Kabir Suman)। বাংলার সুশীল সমাজ দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগার শুরু করেন। আর সেই বিতর্কে কার্যত ইতি টানলেন স্বয়ং কবীর সুমন। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি ক্ষমা চেয়ে নিলেন। বললেন, "আমি সেই সহনাগরিকের কাছে, বিজেপি আর এস এসের কাছে এবং বাঙালিদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।"
বিতর্কের সূত্রপাত দিন কয়েক আগেই। এক সংবাদমাধ্যমের কর্মীর সঙ্গে ফোনালাপে অশ্রাব্য গালিগালাজের অভিযোগ ওঠে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল সেই অডিও ক্লিপ ঘিরে তৈরি হয় একের পর এক বিতর্ক। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ এক টুইট বার্তায় বলেছিলেন, "যে অডিওটি ঘুরছে, সেটি যদি কবীর সুমনেরই হয়, তাহলে তা অতি আপত্তিকর এবং তীব্র প্রতিবাদযোগ্য। এর জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত, না চাইলে ব্যবস্থা হওয়া উচিত। জনপ্রিয় গায়ক বা প্রতিভাধর বুদ্ধিজীবী হলেই এসব বলা যাবে, এটা হতে পারে না।" এখানেই শেষ নয় কবি, গীতিকার শ্রীজাত বলেন, "শিল্প করলেই সকলের মাথা কিনে নেওয়া যায় না, এই শিক্ষা আমরা কোনওদিন পাইনি।"
বিতর্ক এখানেই শেষ হতে পারত। ফের গতকাল এক ফেসবুক বার্তায় বলেন, "ফোনে, হোয়াটসঅ্যাপে স্বাভাবিক ভাবেই আমি আক্রান্ত। এটাই হওয়ার কথা। আরও হবে। আমার যায় আসে না। যা করেছি তা, দরকার হলেই, আবার করব।" এরপরেই তৈরি হয় ফের বিতর্ক। রাজ্য বিজেপির তরফে শনিবারই মুচিপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। আর কাকতালীয় ভাবে রবিবার এক পোস্টে ক্ষমা চেয়ে নিলেন কবীর সুমন। যদিও তিনি বলেছেন, "আপনাদের যদি ভাবতে ভাল লাগে যে আমি খুব ভয় পেয়ে এটা লিখছি, তো তাইই ভাবুন। যেটা ভাবলে আপনাদের মন ভাল হয়ে ওঠে সেটাই ভাবুন।" এখানেই শেষ নয়, ধরে ধরে বাঙালির কাছে বিভিন্ন বিষয়ের ক্ষমা চাইতেও প্রস্তুত তিনি। সেই পোস্টে তিনি বলেছেন, "আইনরক্ষীরা নিশ্চিন্ত থাকুন। আমি চেষ্টা করব সব ব্যাপারে একদম চুপ থাকতে। আর কোন কোন ব্যাপারে কে কে আমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা দাবি করছেন বা করবেন বলে ভাবছেন দয়া করে একটি তালিকা বানিয়ে ডাকযোগ পাঠান। আমি নতমস্তকে সম্মতিসূচক সই করে দেব।"
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার এই ফোনালাপ ভাইরাল হওয়ার পরেই রীতিমতো বাংলার সুশীল সমাজে ত্রাহি ত্রাহি রব ওঠে। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দু'দলে ভাগ হয়ে চলতে থাকে বিতর্কের উপর বিতর্ক। আর আজকের পোস্টে তিনি সব বিতর্কের ইতি টেনে ক্ষমা চেয়ে নিলেন, বলছেন ওয়াকিবহাল মহল। পাশাপাশি গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে পদ্মশ্রী দেওয়া নিয়ে ফের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন। বললেন, "আমার মাতৃসমা, গুরুস্থানীয়া সুরসম্রাজ্ঞী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে তাঁর নব্বই বছর বয়সে যে পদ্মশ্রী খেতাব ছুঁড়ে দেওয়া হল তা মানতে পারলাম না।"