গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) বৈঠকে গরহাজির ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandyopadhyay)। তবে সৌজন্য সাক্ষাৎকারের পর তিনি চলে এসেছিলেন। এরপর থেকেই মোদী-মমতার দ্বৈরথ থামছেই না। তৈরি হয়েছে কেন্দ্র রাজ্যের সংঘাত পরিস্থিতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতিকে কড়া ভাষায় নিন্দা করেছিল গেরুয়া শিবির। তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) তরফেও এর স্পষ্ট জবাব দেওয়া হয়েছিল। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হলেন। তিনি আজ নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, "বাংলার প্রয়োজনে আমি প্রধানমন্ত্রীর পায়েও পড়তে পারি। কিন্তু এভাবে অপমান করবেন না।"
মুখ্যমন্ত্রী পরিসংখ্যান তুলে বলেছেন কীভাবে বারবার তাঁকে অপমান করা হচ্ছে। এ কথা বলতে গিয়ে তিনি ২৩ জানুয়ারি নেতাজি জন্ম জয়ন্তীর প্রসঙ্গও তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, "বাংলা আমার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাংলার জন্য প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী পায়ে পড়তে পারি। প্রধানমন্ত্রী, আমার উপর আপনার রাগ থাকতে পারে। যদি আপনার পায়ে পড়লে সেই রাগ চলে যায় তাও করতে আমি তৈরি। কিন্তু বারবার এভাবে অপমান করবেন না।" মমতার অভিযোগ এবারেও মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের নাম করে বিজেপির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখান তিনি গিয়েও ছিলেন। তারপরও তাঁকে অপমান করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'তড়িঘড়ি' বদলির বিষয়েও সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির এক সপ্তাহের মধ্যেই ডেকে নিচ্ছে কেন্দ্র। এ যেন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলছে তৃণমূল। যদিও বিজেপির দাবি এটি রুটিন বদলি। কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে হাত জোড় করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বলেছেন, "দয়া করে এই নোংরা খেলা খেলবেন না। আবেদন জানাচ্ছি, এই চিঠি প্রত্যাহার করুন। ওকে কাজ করতে দিন। মানুষের জন্য কাজ করতে দিন। আমরা টিম হিসেবে কাজ করছি।"
মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলি নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মোদী সরকারের সমালোচনা করেছে কংগ্রেসও। কংগ্রেসের পক্ষে এক বিবৃতি মারফত দলের সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেছেন, কেন্দ্র সরকারের এই ভাবে সরাসরি গণতন্ত্রের অবমাননা দেশে বিশৃঙ্খলা ডেকে আনবে। এভাবে আচমকা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ কখনোই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে হয় না। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সৎ এবং কর্মঠ মানুষকে একপেশেভাবে এই বদলির নির্দেশ দিয়ে অপমান করেছে কেন্দ্র। আমার এবং মুখ্যসচিবের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হয়েছে।"
প্রসঙ্গত, কেন্দ্র রাজ্যের দ্বৈরথ পূর্বেও ছিল। তবে মুখ্যসচিব বদলের ঘটনায় তা আরও নতুন মাত্রা পেয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক একাংশ।