বঙ্গ রাজনীতিতে রক্তের রং, সকাল থেকেই উত্তপ্ত কোচবিহার। কোচবিহারেই আজ মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। এর মধ্যে শুধুমাত্র শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রের মাথাভাঙা ফাঁড়ি এলাকায় জনসমাগম ও অশান্তি এড়াতে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন। কাজেই উত্তেজনা চরমে। যদিও এনিয়ে তাপ উত্তাপ নেই তেমন। পুলিশ সুপারের বক্তব্য, “নিজেদের আত্মরক্ষা করতেই গিয়ে গুলি চালায় পুলিশ।"
পুলিশের আরও বক্তব্য, "এক যুবক অসুস্থ হয়ে পড়ছিল। তার চিকিৎসা করছিল স্থানীয় কয়েকজন। সেই সময় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছিল বাহিনীর কয়েকজন জওয়ান। ঠিক তখন গুজব ছড়ায়, সিআইএসএফের মারে ওই যুবক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারপরেই প্রায় তিনশো-সাড়ে তিনশো গ্রামবাসী, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা, জওয়ানদের ঘিরে ধরে। উত্তেজনা ছড়ায়। অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলে। এমনকী, ব্যালট ছিনতাইয়ের অবস্থা তৈরি হয়। তখন নিয়ম মেনেই গুলি চালায় বাহিনী। ১৫ রাউন্ড গুলি চলে। ৪ জনের মৃত্যু হয়।”
অন্যদিকে কমিশনকে দেওয়া রিপোর্টে রাজ্যের পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে জানিয়েছেন, "শীতলকুচির জোড়পাটকির যে ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। তাতে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ব্যহত হচ্ছিল। খবর পেয়ে সেখানে কুইক রেসপন্স টিম (QRT) পাঠানো হয়। এরপর দু’পক্ষের সংঘর্ষ আরও তীব্র হতে থাকলে পরিস্থিতি সামলাতে ময়দানে নামে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু গ্রামের মানুষজন তাদের ঘিরে ধরেন। তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সেই সময় আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালাতে হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে।" যদিও সাংবাদিক বৈঠকে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেওয়া থেকে এড়িয়ে যান সিইও আরিজ আফতাবের।
এরপরেই শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেই দায়ী করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শীতলকুচি কাণ্ডে সিআইডি তদন্তের পক্ষে সওয়াল করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন শিলিগুড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি বলেন, "আমি CID তদন্ত করে দেখব। এখন নির্বাচন চলছে তাই সম্ভব হবে না। কিন্তু, ভোট মিটতে আমি চাই CID তদন্ত করে দেখুক। পরিকল্পনা করে সবটা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্ররোচনাতেই এতগুলো সাধারণ ভোটারকে খুন করা হয়েছে।"