শাসকের লাল চোখ উপেক্ষা করে বারবার ঝলসে উঠেছে শোষিতের প্রতিবাদ, প্রতিরোধ। কাস্তে, হাতুড়ি, কুড়ুল, টাঙি, লাঠি নিয়ে সংগ্রামের কথা ইতিহাস থেকে জেনেছি। জেনেছি তেভাগা আন্দোলনের কথা! কিংবা তিতুমীরের সম্মিলিত কৃষক আন্দোলন। আর হালের গত দেড় বছরের বেশি সময়কাল ধরে চলা তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে চলা লাগাতার কৃষক আন্দোলনের কথা গোটা বিশ্বেই সর্বজনশ্রুত। তার সঙ্গে জুড়েছে উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরির কৃষক আন্দোলন প্রতিবাদ, প্রতিরোধের কথা।
এবার দুর্গাপূজার থিমে ধরা পড়ল তেমনই কৃষক আন্দোলনের খণ্ডচিত্র। দমদম পার্ক ভারতচক্রের মণ্ডপের প্রতিটি কোণায় ধরা পড়ল কৃষক আন্দোলনের নানা চিত্র। তুলে ধরা হয়েছে কৃষক আন্দোলনের নানা লড়াইয়ের কথা। শিল্পী অনির্বাণ দাসের ভাবনায় উঠে এসেছে তেমনই এক বৈচিত্র্যপূর্ণ শিল্পচেতনা। শাসকের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ কৃষক আন্দোলনের যেন বাস্তব রূপায়ণ ঘটানো হয়েছে এই মণ্ডপ সজ্জায়।
কেবল মণ্ডপ সজ্জা নয়, মণ্ডপের গায়ে লেখা রয়েছে কৃষক আন্দোলনের নানা স্লোগান। প্রবেশ ও প্রস্থান পথে আছে উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরির কৃষক আন্দোলনের কথা। বলা হয়েছে, 'লখিমপুর খেরির পাশে দাঁড়ান।' আবার কোথাও লেখা, 'লখিমপুর খেরি আমরা তোমায় ভুলছি না।' আবার কোথাও লেখা, 'মোটর গাড়ি ওড়ায় ধুলো, পিষে মরে চাষিগুলো!' পুজো কমিটির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন, সংযুক্ত কিষান মোর্চা।
এবার দমদম পার্ক ভারতচক্রের এই পুজো মণ্ডপের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানার অভিযোগ আনলেন এক আইনজীবী। বলা হয়েছে, জুতো দিয়ে পুজো মণ্ডপ সাজিয়ে হিন্দু ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানা হয়েছে। যত শীঘ্রই এই অংশটি পুজো উদ্যোক্তারা সরিয়ে না নিলে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। পুজো মণ্ডপের মধ্যে কৃষক আন্দোলনের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। কোথাও ট্রাক্টর, আবার কোথাও শক্ত হাতে বেয়োনেট। কিন্তু বাধ সেধেছে এই হাওয়াই চটির আদলে জুতোর ব্যবহার। যা নাকি হিন্দু ধর্মীয় ভাবাবেগে তীব্র আঘাত হেনেছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই পুজো কমিটিকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মণ্ডপ থেকে জুতোর ভাবনা সরিয়ে না নিলে পুজো কমিটির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বলে খবর।