কবি জয় গোস্বামীর বহুল পরিচিত একটি কবিতা 'মালতীবালা বালিকা বিদ্যালয়'-এর আদলে তৈরি অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষের (Rudranil Ghosh) 'অনুমাধব' কবিতা বর্তমানে ভাইরাল। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসার বন্যা। খোদ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) সেই কবিতার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছিলেন, "কৌতুক ও হাস্যরসে পরিপূর্ণ এই কবিতা পাঠ করে বাংলার মানুষ কে এই দুঃসময়ের মধ্যে হাসাবার জন্য বিশিষ্ট শিল্পী রুদ্রনীল ঘোষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।" এবার রুদ্রনীল ঘোষকে কাউন্টার অ্যাটাক করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের যুব আইকন দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debangshu Bhattacharya)।
তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে রীতিমতোই সক্রিয়। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সোজাসাপ্টা কথা বলতে পছন্দ করেন। এবার রুদ্রনীল ঘোষের সাম্প্রতিক 'অনুমাধব' প্যারোডির আদলে দেবাংশুর 'রুদ্র দাদা' তো রীতিমতোই ভাইরাল। জবাব পাল্টা জবাবে বাংলা রাজনীতির আঙিনায় তুঙ্গে বিতর্ক। আর আমোদপ্রিয় বাঙালি দু'টোই উপভোগ করছেন। কেউ রুদ্রনীল ঘোষের কবিতায় মন্তব্য করছেন, "কী দিলেন দাদা!" আবার কেউ দেবাংশু ভট্টাচার্যের ছড়ার নীচে পাল্টা মন্তব্য ছেড়ে আসছেন, "এই তো যথার্থই কাউন্টার অ্যাটাক!" আর দুই শিবিরের ভার্চুয়াল লড়াই ঘিরে তুঙ্গে জল্পনা।
সিনেমার আঙিনায় রুদ্রনীল ঘোষ যথেষ্ট পরিচিত মুখ। তাঁর অনবদ্য অভিনয়ে মুগ্ধ আমবাঙালি। যদিও দিন কয়েক আগেই তিনি অভিযোগ করেছিলেন, বিরোধী দল করার কারণে তিনি নাকি কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না। দেবাংশু ভট্টাচার্য এখানেও প্রশ্ন তুলেছেন। বলেছেন, বাদশা মৈত্র কিংবা অঞ্জনা বসুর তো কাজ পেতে অসুবিধে হচ্ছে না। আর রুদ্রনীল ঘোষের ক্রমাগত দল বদল ঘিরে দেবাংশুর প্রশ্ন, "আজকে তুমি আলিমুদ্দিন, কালকে কালীঘাট/ কবে আবার চুকিয়ে দেবে মুরলীধরের পাঠ/ ডেস্কে বসে হিসেব করো, বিরাট তোমার ঘর/রং বদলে ঠিক কতটা বদলে যাবে স্বর।''
এখানেই শেষ নয়। রুদ্রনীল ঘোষের প্যারোডির জবাব দিতে গিয়ে দেবাংশুর প্রশ্ন, "মার্ক্স, লেনিন, স্ট্যালিন মিশে শিরায় শিরায় ইনকিলাব/ গালের গোড়ায় হালকা দাড়ি, ভুরুর নীচে বিজ্ঞ ভাব/ আজকে দাদুর দাড়ির মাঝে খুঁজেছো কাশবন / রামের তরে ভাসিয়ে দিলে ইনকিলাবি মন?'' অর্থাৎ একসময় রুদ্রনীল ঘোষ বামদল ঘেঁষা ছিলেন। এগারোর পালাবদলের পর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। পেয়েছিলেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। যদিও একুশের নির্বাচনের আগে ফের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির ঘরে নাম লেখান। দেবাংশুর কটাক্ষ শেষে কী না নাম লেখালে 'হেরো পার্টির দলে'।
রুদ্রনীল ঘোষের সেই প্যারোডি কবিতা ঘিরে রীতিমতো চাপানউতোর তো ছিলই। এবার দেবাংশু ভট্টাচার্যের পাল্টা কবিতা ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক। আর দু'জনের এই ভার্চুয়াল আক্রমণ ভালোই উপভোগ করছেন আমজনতা।