ছাত্রনেতা আনিস খান (Anish Khan) 'খুনে' উত্তপ্ত নাগরিক সমাজ। শনিবার নিউটাউনের (New Town) আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Aliah University) সামনে দফায় দফায় আন্দোলনে সামিল হন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। অন্যদিকে গতকাল পার্ক সার্কাস মোড়েও চলে প্রতিবাদ সভা। অচিরেই জ্বলে ওঠে গোটা চত্বর। এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ।
কে এই আনিস খান? আনিস খান হাওড়ার (Howrah) আমতা থানার এক বছর আঠাশের যুবক। বাড়ি আমতার সারদা দক্ষিণ খাঁ পাড়ায়। সূত্রের খবর, তিনি আইএসএফ (ISF) দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এখানেই শেষ নয়, বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউটাউন ক্যাম্পাসে পড়াকালীন তিনি পড়ুয়াদের নানান দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেছিলেন। যদিও এই ক্যাম্পাসের তিনি বর্তমান ছাত্র ছিলেন না। এছাড়া পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট ক্রসিং-এ সিএএ (CAA) কিংবা এনআরসি (NRC) বিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। সামনের সারিতে উপস্থিত থেকে এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন এই আনিস।
এদিন ঠিক কী ঘটেছিল? মৃত আনিসের পরিবারের দাবি, শুক্রবার রাতে জনাকয়েক ব্যক্তি পুলিশের পোশাক পরে তাঁদের বাড়িতে আসে। তাদের মধ্যে তিনজনের সিভিক ভলান্টিয়ারের পোশাক এবং আর একজন পুলিশের খাঁকি পোশাক। নিজেদের আমতা থানার পুলিশ বলে পরিচয় দেয়। একজন আনিসের বাবাকে ঘরে আটকে রাখেন, বাকিরা আনিসকে তিনতলার ছাদে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর খুব জোর একটা শব্দ হয়। নীচে কিছু পড়ার শব্দে আনিসের বাবা আঁতকে ওঠেন। যদিও ততক্ষণে সবশেষ।
ঘটনার পর তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়। পরে আমতা থানার তরফে জানানো হয় এদিন আমতা থানার কোন পুলিশ আনিসের বাড়ি যায়নি। তাহলে পুলিশ বেশে কারা গিয়েছিল? আনিসের এমন পরিণতির কারণ কী? সম্প্রতি আনিস নাকি আইএসএফ দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল। পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে আনিসের উপর বাড়তি চাপ ছিল। সিএএ কিংবা এনআরসি বিরোধী আন্দোলনে সামিল হওয়ার পর থেকেই আনিসের উপর একাংশের কোপ তৈরি হয়। যদিও গোটা ঘটনায় নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে!
তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ এই ঘটনায় বলেছেন, "আনিসের মৃত্যু অস্বাভাবিক ঘটনা। দুঃখের। পুলিশ দেখছে। আশা করি খুনিরা প্রাপ্য শাস্তি পাবে।" কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, "এমন ঘটনা তো উত্তরপ্রদেশে হয়। এ তো কলকাতার ট্রেন্ড নয়।" যদিও ইতিমধ্যেই সমাজের সর্বস্তরের মানুষ প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন।