গতকালই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। সেই ভাষণে ভ্যাকসিন নিয়ে বড়ো ঘোষনা করে তিনি বলেন, রাজ্যগুলিকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেবে রাজ্য। এরফলে চলতি মাস থেকেই ১৮-৪৪ বছর বয়সীরা ভ্যাকসিন পাবেন। অন্যদিকে একই সঙ্গে বেসরকারি সংস্থায় ভ্যাকসিনের চার্জ নিয়েও প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে পরিষেবা কর (সার্ভিস চার্জ) বাবদ মাত্র ১৫০ টাকা নিতে পারবে বেসরকারি হাসপাতালগুলি। এতেই বেসরকারি হাসপাতালে শুরু আপত্তি। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই ফর্টিস হেলথকেয়ারের বক্তব্য, করোনাভাইরাস টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে পরিষেবা কর (সার্ভিস চার্জ) বাবদ যে ১৫০ টাকার সীমা বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্র।হাসপাতালের যে বাড়তি খরচ রয়েছে, তা উঠবে না। তাই টিকাকরণের ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জের সীমা বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছে ফর্টিস। তবে এবার কেন্দ্রের তরফে ফের পরিবর্তন করা হল কোভিশিল্ড টিকার ব্যবধান। এবার বিশেষ ক্ষেত্রে কোভিশিল্ডের দুটি ডোজের ব্যবধান কমানোর পথে হাঁটল কেন্দ্র। প্রথমে জানানো হয়েছিল, কোভিশিল্ড টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া যেতে পারে। এরপর হঠাৎই সিদ্ধান্তে রদবদল ঘটিয়ে বলা হল, চার থেকে ছয় নয় বরং বারো থেকে ষোলো সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিলে তবেই বেশি কার্যকর হবে ভ্যাকসিন। সেই মতোন আপাতত দেশে এই নিয়মেই ভ্যাকসিনেশন চলছে।
তবে এবার চার থেকে ছয় এবং বারো থেকে ষোলো দুই সময়সীমার ধারে কাছে না ঘেঁষে একেবারে মেয়াদ কমিয়ে ২৮ দিন করে দিল কেন্দ্র। আপাতত সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে প্রথম ডোজ নেওয়ার ন্যূনতম ৮৪ দিন পর পাওয়া যায় কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ। তবে যাঁরা পড়াশোনা বা কর্মসূত্রে বিদেশে যাবেন বা টোকিয়ো অলিম্পিকে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সেই সময়সীমা কমিয়ে ২৮ দিন করা হয়েছে। কারণ ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ না নেওয়া থাকলে বিদেশে যাওয়ার ছাড়পত্র মিলবে না। তাই জরুরি পরিস্থিতিতে যারা দেশের বাইরে যাবে, তাঁদের ক্ষেত্রেই এই সিদ্ধান্ত। বাকি প্রত্যেকেই ১২-১৬ সপ্তাহের মধ্যেই পাবে।
এতেই সাধারণ মানুষের কাছে প্রশ্নের বিষয়, ঠিক কতদিনের ব্যবধানে কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নিলে, তা বেশি কার্যকর হবে? যদি ২৮ দিনেই দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া যায়, তাহলে প্রত্যেকের জন্য তাই নয় কেন? এবং যদি ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ নিলে কার্যকর না হয়, তাহলে কেন বাকিদের জন্য এই নিয়ম? তবে এই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি কেন্দ্রের তরফে। এদিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, 'পরামর্শের ভিত্তিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত পঞ্চম গোষ্ঠী। সেখানে বিশেষ ক্ষেত্রে ২৮ দিনের ব্যবধানে কোভিশিল্ডের দুটি ডোজ নেওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। সেইমতো যাঁরা পড়াশোনা বা কর্মসূত্রে বিদেশে যাবেন এবং খেলোয়াড় ও ক্রীড়াব্যক্তিরা অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করবেন, তাঁদের দ্বিতীয় ডোজ প্রক্রিয়ায় গতি আনার জন্য রাজ্যগুলিকে প্রতিটি জেলায় নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে দায়িত্ব তুলে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'