সরকারী এবং সরকারী সাহায্য প্রাপ্ত কলেজের অস্থায়ী অধ্যাপকদের স্থায়ীকরণের ব্যাপারে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠল রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে । অভিযোগ UGC, CSC-র নিয়ম না মেনে কোনো রকম যোগ্যতার পরীক্ষা না দিয়েই চাকরি পাচ্ছেন SACT প্রার্থী রা । এই SACT-দের NET, SET তো দূরের কথা M.A-তে ৫৫% নম্বর পর্যন্ত নেই । যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার কয়েক হাজার গবেষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা ।
গত বছরের অগাস্ট মাসে হাওড়ার এক প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী সরকারী ও সরকারী সাহায্য প্রাপ্ত কলেজগুলোতে অস্বচ্ছ ভাবে যে অস্থায়ী অধ্যাপক নিয়োগ করা হয়েছিল তাদের এক ছাতার তলায় এনে SACT বা State College Aided Teacher নাম দিয়ে ৬০বছর বয়স পর্যন্ত তাদের চাকরি সুনিশ্চিত করেন । মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণার আগেই এই অস্থায়ী অধ্যাপক নিয়োগ UGC, CSC নিয়মমাফিক হয়নি তা স্বীকার করে নিয়েছিল রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর । তবে কেন সরকার তার মতামত আমূল পাল্টে নতুন এই ব্যবস্থা কিসের ভিত্তিতে করলেন তা নিয়ে উঠছে নানান প্রশ্ন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো এই SACT-দের দু'ভাগে ভাগ করা হয় যথা, ক্যাটাগরি-১ ও ক্যাটাগরি-২ । ক্যাটাগরি ১-এ রয়েছেন UGC, CSC নিয়মমাফিক যোগ্য ব্যক্তিরা আর ক্যাটাগরি ২-তে রয়েছেন UGC, CSC-র নিয়মমাফিক অযোগ্য ব্যক্তিরা এবং এদের সংখ্যাই অধিক । বর্তমানে UGC, CSC নিয়ম মেনে যোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা ৩০,০০০ । কিন্তু কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে এই SACT-দের নিয়োগ করা হচ্ছে তা পরিষ্কার করেনি সরকার ।
কোনো রকম পরীক্ষা না দিয়েই যে ১৪,০০০ SACT চাকরি পাচ্ছেন তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এইভাবে নিয়োগ হলে আগামী দিনে কলেজগুলোতে পঠন-পাঠননের মান কী হবে, অযোগ্য ব্যক্তিরা অধ্যাপনা করলে কী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিষয়ের প্রতি আগ্রহ কম দেখা যাবে ভবিষ্যতে, আবার একসাথে ১৪,০০০ SACT নিয়োগ করলে আগামী সময় নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে কিভাবে ?
এই SACT ঘোষণার পর থেকেই আন্দোলনে সোচ্চার কয়েক হাজার ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষক । তারা কলকাতা হাইকোর্টে SACT-র বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করেন, এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জাস্টিস তপব্রত চক্রবর্তী রাজ্য সরকারকে এভিডেভিড জমা দিতে বললেও তাতে কর্ণপাত করেননি রাজ্য সরকার। বরং করোনা পরিস্থিতির জন্য ৩১শে জুলাই পর্যন্ত যেখানে রাজ্যের সব স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঠিক সেই পরিস্থিতিতেই SACT প্রার্থীদের বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে তাদের নিয়োগের চিঠি বা কল লেটার ।