রাত পোহালেই তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) শহীদ স্মরণ। চলতি বছরে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পর এই প্রথম কোনো বড় জনসমাবেশ করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে এই জনসমাবেশ হবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে প্রায় ৫০ লাখের বেশি কর্মী সমর্থক ২১ জুলাই শহীদ স্মরণে অংশগ্রহণ করবেন। প্রত্যেকটি বুথে এই বিশেষ দিন পালনের কর্মসূচি ঘোষিত হয়েছে। বাংলা ছাড়াও ভিন রাজ্যে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বক্তৃতা জায়েন্ট স্ক্রিন বা টিভিতে সম্প্রচারিত হবে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বক্তৃতা শোনার জন্য নয়াদিল্লিতে (New Delhi) মোদি বিরোধী নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। নয়াদিল্লির কনস্টিটিউশনাল ক্লাবে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা শোনার আয়োজন করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা।
এবার তৃণমূল কংগ্রেসের শহীদ দিবস পালনের কর্মসূচি দেখে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। বাংলা ছাড়া অন্যান্য রাজ্যে এর আগে কোনোদিন তৃণমূল কংগ্রেস শহীদ দিবস পালনের কর্মসূচি নেয়নি। এছাড়া মোদি বিরোধী নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে তৃণমূল হয়তো গোটা দেশজুড়ে মোদি বিরোধী শক্তি তৈরি করছেন বলে মনে করেছেন অনেকেই। গোটা দেশের সমস্ত ভাষাভাষীর নেতা-নেত্রীরা যাতে মমতার বক্তৃতা বুঝতে পারেন তার জন্য মাল্টি সাব টাইটেলের মাধ্যমে সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই যুব কংগ্রেসের এক কর্মসূচিতে গুলি চালানো হয়েছিল এবং তাতে মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের। সেই কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেখান থেকেই জন্ম নেয় তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতার নেতৃত্বে ঘাসফুল শিবির বাংলা শাসনের দায়ভার পেলে ২১ জুলাই তারিখটিকে শহীদ দিবস হিসাবে পালন করা শুরু হয়। এতদিন তৃণমূলের এই বিশেষ দিন স্মরণ শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু চলতি বছরে গুজরাটের ৩২ টি জেলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ সম্প্রচারিত হবে। গুজরাট ছাড়াও দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, অসম, ত্রিপুরা ইত্যাদি জায়গায় আগামীকাল শহীদ দিবস পালন হবে। একুশের মঞ্চকে ব্যবহার করে তৃণমূল সুপ্রিমো জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর্ভুক্তি করাতে চাইছেন।
তবে এত প্রস্তুতি চোখ এড়ায়নি বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বদের। তাঁরা আগামীকাল তৃণমূল কংগ্রেসের শহীদ দিবসের পাল্টা হিসেবে "শহীদ শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস" পালন করবেন বলে ঘোষণা করেছেন। দিল্লির রাজঘাটে পালিত হবে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস। কলকাতার হেস্টিংস ভবনেও শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস পালন হবে। ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা দেবেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ একাধিক প্রথম সারির বিজেপি নেতারা। দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল ৪ টে পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন রাজ্যের সমস্ত জেলার মন্ডল ও বুথস্তরের নেতাকর্মীরা। গেরুয়া শিবির ভোট-পরবর্তী হিংসায় মৃত কর্মীদের শ্রদ্ধা অর্পন করার জন্য আগামীকাল এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিজেপির দাবি যে তৃণমূল জামানায় এখনও অব্দি ১৮০ জনের বেশি বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।