সম্প্রতি গেরুয়া (BJP) শিবির ছেড়ে বাম (CPM) শিবিরে যোগদান করেছেন অভিনেতা অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় ও রুপা ভট্টাচার্য। গত সোমবার তাঁরা সিপিএম পরিচালিত যাদবপুর শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ৫০০ দিনের অনুষ্ঠানে মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন। তাঁদের সাথে উপস্থিত ছিলেন বিমান বসু (Biman Bose) সহ সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব ও টলিউডের বেশকিছু তারকা। তবে অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রুপা ভট্টাচার্যের বাম শিবিরে যোগদান করা একদমই মেনে নিতে পারেননি "কমিউনিস্ট" শ্রীলেখা মিত্র (Sreelekha Mitra) ও রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় (Rahul Bandhopadhya)। তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়াতে ক্ষোভ ও অভিমানের বহিঃপ্রকাশ করেন। সাফ জানিয়ে দেন, "বিজেপি ছেড়ে এসে সিপিএমে যোগ দেওয়া কারোর সঙ্গে তাঁরা মঞ্চ ভাগ করে নিতে পারবে না।"
করোনা পরিস্থিতিতে বামেদের যাদবপুর শ্রমজীবী ক্যান্টিন টানা ৫০০ দিন লকডাউনের দরিদ্র মানুষের মুখে ভাত তুলে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিল। সিপিএমের যুব ছাত্ররা প্রতিদিন প্রায় ৭০০ মানুষের মুখে ভাত তুলে দিয়েছে। এই উপলক্ষে গত সোমবার যাদবপুর 8b বাস স্ট্যান্ডের সামনে উপস্থিত ছিলেন বিমান বসু, সুজন চক্রবর্তী, মহম্মদ সেলিম, বিকাশ ভট্টাচার্য প্রমুখরা। তাঁদের সাথে মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন গেরুয়া দলত্যাগী নেতা রুপা ভট্টাচার্য ও অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়। রুপা ভট্টাচার্য মিছিলে অংশগ্রহণ করে জানান, "একটা দল বিধানসভায় শূন্য হয়ে যাওয়ার পরও এই ধরনের কাজ করে যাচ্ছে। তাই সেই দলকে সমর্থন না করে ঘরে বসে থাকা সম্ভব নয়।" অন্যদিকে অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন ধরেই গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন। গত সোমবার মিছিলে এসে তিনি তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
তবে তাঁদের বাম শিবিরে আগমনকে একেবারেই মেনে নিতে পারেননি শ্রীলেখা মিত্র। নাম না করে সোশ্যাল মিডিয়াতে তিনি দলের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, "দলের প্রচার করার জন্য আমি বারংবার স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছি। কারণ আমি কমিউনিস্ট মতাদর্শে বিশ্বাসী। সারা জীবন বাম মতাদর্শ অনুসরণ করে এগিয়ে চলি। তোমার কি মনে হয় আমি অন্য ক্ষমতাসীন দলের কাছে যাইনি? ওহ কিন্তু এমনকি প্রার্থীর জন্য একটি টিকিটও? ছেলেরা যদি মেনে নেয়, তাহলে আমি নিশ্চিত জীবন অনেক সহজ হতে পারত তাই না? বরং আমরা আদর্শ ও বিশ্বাসের জন্য দাঁড়ানোর জন্য বেছে নিয়েছি। কিন্তু এরপর যেই লোক প্রকাশ্যে আমাদের সমালোচনা করেছিল, আমাদের চিপিম, চিলেখা বলে প্রকাশ্যে আইনি নোটিসের হুমকি দিয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে এক মঞ্চ ভাগ করে নেওয়া সম্ভব নয়। আমি দুঃখিত। আমি আহত... আমি ক্লান্ত বোধ করছি।"
শ্রীলেখার মতই রাহুল বন্দোপাধ্যায় ফেসবুকে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেছেন, "আমি কোনো প্রলোভনে রাজনীতি করি না। রাজনীতি একান্তই আদর্শগত। আমার বামপন্থা সিপিএমের মুখাপেক্ষী নয়। যে একবারের জন্যও সাম্প্রদায়িক দলের সাথে জড়িয়েছে, বিশেষত সে যদি সেলিব্রেটি হয়, তার সাথে কোনোদিন একমঞ্চে আমি থাকবো না। এবার সিপিএম ভেবে দেখুক আমাদের প্রয়োজন, না তাদের।"