বাবা-মা এবং দুই ভাইয়ের ভরা সংসার। বাবার ঝালমুড়ির ব্যবসা। রোজ বেরিয়ে যেতেন ঝালমুড়ি ফেরি করতে। বাড়িতে মা এবং দুই ছেলের ঘরকন্না। আচমকাই সেই সুখের সংসারে অসুখের বাতাবরণ। হঠাৎ-ই একদিন মা চলে গেলেন প্রেমিকের সঙ্গে। আর ফিরলেন না। মেনে নিতে পারেনি বড় ছেলে। রোজ মায়ের জন্য চোখের জল ফেলত সে। অসহায় বাবা ঘর সামলে, ব্যবসা সামলে ছেলেদের যত্ন নিতে অপারগ। ছেলেদের ভালোর জন্যই নতুন করে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলেন। না, বড় ছেলে মেনে নিতে পারেনি। মনের দুঃখে আত্মহত্যার পথই বেছে নিল সে।
ঘটনাটি এ রাজ্যের মুর্শিদাবাদের (Murshidabad)। মুর্শিদাবাদের রানিনগর এলাকার কালিনগর গ্রামের জিয়ারুল হক। পেশায় তিনি ঝালমুড়ি ব্যবসায়ী। তাঁর দুই ছেলে রিমন এবং ইমন। আচমকাই রিমন ও ইমনের মা জিয়ারুল হককে ছেড়ে চলে যান। এরপর থেকে সংসারে দেখভালের কেউ নেই। জিয়ারুল হক এতদিন নিজেই সংসার সামলাতেন, ছেলেদের দেখাশোনা করতেন। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? তিনি নতুন করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। মেনে নিতে পারেনি বড় ছেলে বছর ন'য়েকের রিমন। একদিকে মায়ের ঘর ছেড়ে চলে যাওয়া, অপরদিকে বাবার নতুন করে বিয়ের সিদ্ধান্ত তার শিশুমনে গভীর প্রভাব ফেলে। অনেকটাই অভিমানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিল রিমন।
![Rudranil Ghosh and Debangshu Bhattacharya](https://pori-prod.cdn.19xu.nl/photo-thumbnails/2022/04/10/Screenshot_20220410-100149_Quotes_Creator.jpg)
![healthy food diet](https://pori-prod.cdn.19xu.nl/photo-thumbnails/2021/05/23/photo-uploads/brooke-lark-jUPOXXRNdcA-unsplash.jpg)
![Rains বৃষ্টি](https://pori-prod.cdn.19xu.nl/photo-thumbnails/2022/08/20/flood-965092_1280.jpg)
স্থানীয়দের বক্তব্য, মায়ের চলে যাওয়ার পর রিমন গভীর মানসিক অবসাদে ভুগছিল। বহুবার তার পাশে থাকার চেষ্টা করেছে পাশের বাড়ির লোকজন, আত্মীয়স্বজন। কিন্তু বাবার নতুন বিয়ের সিদ্ধান্তে সে আরও ভেঙে পড়ে। বড় ছেলের মৃত্যুর পর বাবা জিয়ারুল হকের বুকভাঙা হাহাকার, "ওদের ভালোর জন্যই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এমন হবে জানলে কখনোই করতাম না।" এদিকে ছেলের মৃত্যু সংবাদ পেয়েও দেখতে আসেননি মা। পাড়ার লোকজনদের বক্তব্য, "মায়ের হৃদয় এতটা কঠিন হতে পারে? অবিশ্বাস্য!"
এদিকে দাদার মৃত্যুর দৃশ্য নিজের চোখেই দেখে বছর পাঁচেকের ছোট ভাই ইমন। নিজেই ফাঁস খুলে দাদাকে নামায়। চোখে-মুখে জল দেয়। পাড়ার লোকজনদের ডেকে আনে। স্থানীয়দের দাবি, তখনও রিমনের দেহে প্রাণ ছিল। যদিও স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। দাদার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে ইমন। আর বাড়ির লোকজনদের হা-হুতাশ এইটুকু বাচ্চা ছেলের এত অভিমান? এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।