শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলশহর জেলায় গায়ে কাঁটা দেওয়া একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, অল্পবয়সী এক গৃহবধূর উপর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের উপস্থিতিতে অকথ্য অত্যাচার চালাচ্ছে তাঁর স্বামী। অভিযোগ, পরেরদিনও একইভাবে অত্যাচার করা হয় গৃহবধূর উপর। যার জেরে মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার দুদিন অতিক্রান্ত হলেও এখনও অভিযুক্ত স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
শুক্রবারের ভিডিওটিতে দেখা যায়, গৃহবধূ চিৎকার করে তাঁর মাকে ডাকছেন। তাঁর মুখ দিয়ে চুঁইয়ে পড়ছে রক্ত। আরও একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, খাটিয়ার উপর শুয়ে আছেন গৃহবধূ। তাঁর মুখ দিয়ে ফেনা বেরোচ্ছে। একজন মহিলা তাঁর মুখে জল ঢালছেন। ভিডিওর পিছন থেকে একজন মহিলাকে (সম্ভবত অভিযুক্তের মা) বলতে শোনা যায়, এতো ভয়ঙ্করভাবে মহিলাটিকে যেন মারধোর না করা হয়।
যদিও অত্যাচারের সময় তার ভিডিও কে করছিল সে বিষয়ে সঠিক খবর এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। সংবাদমাধ্যমের সামনে ভিডিওগুলি প্রকাশ করেন মৃতার বোন। অপরাধীকে এখনও ধরতে না পারলেও উত্তরপ্রদেশ পুলিশ তার সম্বন্ধে বেশ কিছু তথ্য জোগাড় করেছেন ইতিমধ্যেই। বুন্দেলশহর জেলার পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, ঘটনায় মুল অভিযুক্ত, গৃহবধূর স্বামী হাশিম। মৃতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুন এবং পণের জন্য নির্যাতনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
মৃতার বোন অভিযোগ করেছেন, অভিযুক্ত হাশিম গত মাসেই তাঁর দিদিকে বিয়ে করে। যদিও সে সময়ে তার প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সাথে বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি। বিয়ের পর থেকেই তাঁর দিদির উপর নিয়ম করে নির্যাতন করত হাশিম। দিদির মৃত্যুর সুবিচার চেয়ে মৃতার বোন জানিয়েছেন, তাঁর দিদির সাথে যেমন হয়েছে, তা যেন কোনও মহিলার সাথে কোনোদিনও না ঘটে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের শাস্তিরও দাবী করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালে দেশে নির্যাতিতা মহিলাদের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। সেখানে এক বছরে ৪৯,৩৮৫ টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয় স্থানে আছে পশ্চিমবঙ্গ। এ রাজ্যে নারী নির্যাতনের সংখ্যা এক বছরে ৩৬,৪৩৯ টি। তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে রাজস্থান (৩৪,৫৩৫), মহারাষ্ট্র (৩১,৯৫৪) এবং মধ্যপ্রদেশ (২৫,৬৪০)। করোনাভাইরাসের কারনে গত বছরে সারা দেশ জুড়ে দীর্ঘকালীন সময় জুড়ে ছিল সম্পূর্ণ লকডাউন। আর এই লকডাউনের সাথেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নারী নির্যাতনের হার, তেমনটাই জানাচ্ছে রিপোর্ট।