করোনা কালে (Covid-19) ব্রাত্য কি অন্যান্য টিকাকরণ? সাম্প্রতিক কালে WHO এবং UNISEF-এর একটি রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, করোনার সময়ে দেশে অন্যান্য টিকাকরণে যথেষ্ট খামতি তৈরি হয়েছে। তা যে যথেষ্ট আশঙ্কার তা এককথায় স্বীকার করেছেন সকলেই। মূলত কোভিড পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে ডিপথেরিয়া, টিটেনাস, পেরিটুসিস প্রভৃতি রোগের টিকাকরণ সফলভাবে হয়নি। বৃহস্পতিবারের প্রকাশিত এক রিপোর্টে এমনই এক তথ্য উঠে এসেছে।
একটি পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে উপরের টিকাগুলি সারা বিশ্বে ১৪ লক্ষ ৩ হাজার শিশু নিতে পারেনি। সেখানে ২০২০ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৩০ লক্ষ ৩৮ হাজার। অর্থাৎ গত এক বছরে প্রায় ১৬ লক্ষের বেশি শিশু এই টিকা গুলি নিতে পারেনি। যা বিশেষজ্ঞদের কাছে যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। এরফলে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে। সেইসঙ্গে অপুষ্টিজনিত রোগ কিংবা অন্যান্য রোগের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন একাংশ। আর একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর গুলিতে সারা বিশ্বে প্রায় ২ কোটি ৩০ লক্ষ শিশু গুরুত্বপূর্ণ ভ্যাকসিন গুলো নেয়নি। যা চিকিৎসকদের কাছে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে ‘দ্য ল্যানসেট’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রের দাবি, কোভিড পরিস্থিতিতে ভারতে হামের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার সংখ্যা কমে গিয়েছে ৮৬ শতাংশ! ডিপথেরিয়া, টিটেনাস ও হুপিং কাশির টিকাকরণ কমেছে ৭৫ শতাংশ। সেই গবেষণাপত্রের লেখিকা কেট কসি এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে এ বিষয়ে বলতে গিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ২০২১ ও পরবর্তী বছরগুলিতেও ভারতের মতো দেশে অতিমারীর প্রভাবে স্বাভাবিক জনজীবন্ত ব্যাহত হতে পারে। তার জেরে শিশুদের টিকাকরণের কাজ ব্যাহত হতে পারে। যা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
কেন দেশে গত বছর গুলিতে এই টিকাকরণের কাজ ব্যাহত হল? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, কোভিড যুদ্ধে লড়তে গিয়ে একটা বড় সংখ্যক চিকিৎসক, চিকিৎসা কর্মীদের যুক্ত থাকতে হয়েছে, ফলে অন্যান্য টিকাকরণের কাজ স্বাভাবিক গতিতে এগোতে পারেনি। পাশাপাশি কোভিড মোকাবিলা করতে গিয়ে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে, অন্যান্য টিকাকরণে তা করা হচ্ছে না। সরকারের এই অবহেলাসূচক মনোভাব যে আগামীতে বড় সংকট আনতে চলেছে, তা বলছেন বিশ্লেষকদের একাংশ।