কেন্দ্রীয় সরকারের আনা তিন ‘নয়া’ কৃষি আইন আসার শুরু থেকেই বিরোধিতা জানিয়ে এসেছেন একটা বড় অংশের কৃষকমহল। এই নিয়ে বিগত বছর থেকেই তাঁরা সিঙ্ঘু সিমান্তে একটানা আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। পাশে পেয়েছেন একাধিক কেন্দ্র সরকার বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী এবং বিরোধী দলকে। সেই জন্য তাদের সরকারপক্ষ ও সরকার ঘেঁষা মানুষদের থেকে অনেক বিদ্রূপও হজম করতে হয়েছে। কখনও তাঁরা হয়েছেন ‘খালিস্তানি’ তো কখনও ‘হিন্দুবিরোধী বামমদতপুষ্ট সংগঠন’। সেই তালিকায় নতুন যোগ, মীনাক্ষী লেখী। বর্তমান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপি নেত্রী মীনাক্ষী লেখী আজ সেই আন্দোলনকারী কৃষকদের ‘মাওয়ালি’ বলে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিলেন। প্রসঙ্গত ‘মাওয়ালি’ শব্দটি মারাঠি ভাষায় বহুল প্রচলিত, যার অর্থ চোর বা গুন্ডা।
সংবাদমাধ্যমের উপর হামলার নিন্দা করে লেখী আজ বলেন, “তারা কৃষক নয়, ‘মাওয়ালি’। অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িত তারা”। একইসঙ্গে ২৬শে জানুয়ারির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “তারা ২৬শে জানুয়ারি যেটা করেছিল, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও অপরাধমূলক কাজ ছিল”। একইসঙ্গে বিরোধীদের খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই নিন্দনীয় ঘটনায় পরোক্ষে সাহায্য করেছে বিরোধীরা’।
একইসঙ্গে আজ তৃণমূল সংসদ শান্তনু সেনের কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো-র হাত থেকে কাগজ টেনে ছিঁড়ে নেওয়ার ঘটনারও নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তৃণমূল সাংসদের আচরণ লজ্জাজনক’। মীনাক্ষীর মন্তব্যের পাল্টা জবাবদিহি করতেও ছাড়েননি কৃষক সংগঠনের নেতারা। কৃষক সংগঠনের নেতা রাকেশ টিকায়েত তাঁর এহেন মন্তব্বের বিপক্ষে বলেন, ‘কৃষকরা কৃষক। তারা গুন্ডা নয়। তারা সমগ্র দেশের অন্নদাতা। তাদের নিয়ে এমন মন্তব্য অশোভনীয়’। এদিন অখিল ভারতীয় কিষান সভার মহাসচিব হান্নান মোল্লাও বলেন, যে কৃষকদের ভোটে জিতে আজ যারা সংসদে গেছেন, তাঁদের কেউই আজ কৃষকদের কথা শুনছে না। পাশাপাশি তিনি এও জানান, ১৩ই অগাস্ট পর্যন্ত পুরদমে চলবে আন্দোলন। কৃষকেরা এই বিলের বিরোধিতা চালিয়ে যাবে।
এর পাল্টা কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার জানিয়েছেন, সরকার কৃষকদের সাথে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। সাথে তিনি এও জানান, সরকারপক্ষ এর আগেও কৃষকদের সাথে বিল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। এবং প্রয়োজন পড়লে তারা আবার আলোচনায় বসবে।