জ্ঞানবাপী মসজিদ (Gyanvapi mosque) চত্বরে যে শিবলিঙ্গ পাওয়া গিয়েছে, সেই জায়গার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। কিন্তু নমাজ পাঠে কোনোরকম বাধা দেওয়া যাবে না, মঙ্গলবার জেলাশাসককে এমনই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme court)। মসজিদে সমীক্ষা বন্ধ করার জন্য দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল মসজিদ কমিটি। শীর্ষ আদালত এলাকাটি সিল করার এবং লোকেদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার জন্য বারাণসী আদালতে ১৬ মে এর আদেশ স্থগিত করেছে। তবে, বারাণসী সিভিল কোর্টের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়নি। এই বিষয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেছেন, "মন্দিরের যে অংশে শিবলিঙ্গ পাওয়া গিয়েছে, তা হাত-পা ধোয়ার জায়গা। নমাজের স্থান আলাদা।" বর্তমানে সুপ্রিম কোর্ট মামলার শুনানি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রতিক্রিয়ায়, সিনিয়র অ্যাডভোকেট হুজেফা আহমাদি, জ্ঞানভাপি মসজিদ কমিটির পক্ষে উপস্থিত হয়ে বলেন, "মুসলমানদের 'ওজু' বা অযু করার জায়গা আটকে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। ফলত কীভাবে জায়গাটি সিল করবেন? আপনি স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করছেন। আমাদের কথা না শুনেই আইন পাস করা হয়েছে। এগুলো সবই বেআইনি আদেশ।" অন্যদিকে, বারাণসী আদালত বিতর্কিত কমপ্লেক্সের ভিডিওগ্রাফি সমীক্ষা পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত দলটিকে প্রতিবেদন পেশ করার জন্য আরও দুই দিনের সময় দিয়েছে। পাশাপাশি, জরিপ পরিচালনার জন্য নিযুক্ত কমিশনারদের একজনকে অপসারণ করেছে আদালত। অ্যাডভোকেট কমিশনার অজয় মিশ্র মিডিয়ার কাছে তথ্য ফাঁস করার জন্য 'তার দায়িত্ব পালনের প্রতি দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ' বলে গণ্য করা হয়েছে।
কি এই জ্ঞানভাপি মামলা?
১৯৯১ সালে বারাণসী আদালতে দায়ের করা একটি পিটিশনে দাবি করা হয়েছিল যে ষোড়শ শতকে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একটি অংশ ভেঙে আওরঙ্গজেবের নির্দেশে জ্ঞানভাপি মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল। আবেদনকারী এবং স্থানীয় পুরোহিতরা জ্ঞানভাপি মসজিদ কমপ্লেক্সে উপাসনার অনুমতি চেয়েছিলেন। এরপর ২০১৯ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট আবেদনকারীদের দ্বারা অনুরোধ করা একটি ASI সমীক্ষার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় তখন যখন জ্ঞানভাপি মসজিদ কমপ্লেক্সের মধ্যে পাঁচজন হিন্দু মহিলা নিয়মিতভাবে গৌরী এবং অন্যান্য মূর্তির পূজা করতে চেয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, গত মাসে, বারাণসীর একটি আদালত জ্ঞানভাপি মসজিদ কমপ্লেক্সের ভেতর যখন পাঁচজন হিন্দু মহিলা প্রাঙ্গনের পশ্চিম দেয়ালের পিছনে উপাসনা করছিলেন তখন একটি ভিডিওগ্রাফ জরিপ করেন। রিপোর্ট আসার আগে মসজিদের বাকি অংশ সমীক্ষার দাবি জানিয়েছে হিন্দুপক্ষ। কথিত শিবলিঙ্গের চারপাশের দেওয়াল সরিয়ে পূর্ব দেওয়াল খুলে দেওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার আবেদন করা হয়। এ বিষয়ে আদালতের রায় দেয়নি। আর তারপর থেকেই চলছে এই মামলা।