শিব দীপাবলির রাতে এক অনন্য রূপে সেজে উঠেছিল গোটা কাশী শহর। বিগত দুই দিন ধরেই উৎসবের আবহ বিরাজমান ছিল এই শহরে। আজ সোমবার সন্ধ্যায় উৎসব চূড়ান্ত মাত্রায় পৌঁছেছিল। প্রদীপের আলোতে সেজে ওঠে গোটা কাশী শহরকে বড়ই মায়াবী লাগছিল। বারানসী ঘাট থেকে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে গঙ্গার বুকে বিছানো হয়েছিল প্রদীপের আলোর চাদর। কাশীর এই আলোকমাখা সৌন্দর্য হয়তো চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাসই করতে পারবেন না। আসলে বারানসীবাসীর কাছে শিব দীপাবলিতে গঙ্গারতি এক বিশেষ দিন। এই দিনের জন্য অনেকদিন আগে থাকতেই শুরু হয়ে যায় বিশেষ প্রস্তুতি। এবার কাশীর এই বিশেষ দিনে উৎসবের শরিক হতে উপস্থিত হয়েছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিশেষ দিনে শহরে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি উৎসবকে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছিল।
শিব দীপাবলিতে গঙ্গারতির এই বিশেষ দিনে বারানসী সহ বিভিন্ন ঘাটে রং দিয়ে আলপনা আঁকা হয়। সেইসাথে সাজানো হয় রংবেরঙের ফুল দিয়ে। ঘাটে ঘাটে প্রদীপ জ্বালানোর জন্য সংগঠন তৈরি করে বারানসীর সমস্ত ঘাটে প্রায় ১১ লক্ষ প্রদীপ জ্বালিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। গঙ্গার ঘাট ছাড়াও গোটা কাশী শহরের প্রতিটি পাড়ায়, প্রতিটি গলিতে এমনকি প্রত্যেকটি ঘরে প্রদীপ জ্বালানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সারাদিনের কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল গঙ্গাবক্ষে প্রমোদতরীতে বসে কাশীর বিখ্যাত দশাশ্বমেধ ঘাটের আরতি দর্শন করা। এইসময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী আজ গঙ্গাস্নান সেরে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর করিডর উদ্বোধন করেন। এই করিডর উদ্বোধনের মাধ্যমে পুরো কাশী শহরের ভোল পাল্টে দিলেন তিনি। এতদিন কাশীর মন্দির গঙ্গা থেকে দেখা যেত না। শুধু মন্দিরের চূড়া উপর থেকে উঁকি মারত। কিন্তু এখন গঙ্গা থেকে সোজা দেখা যাবে কাশী মন্দির। ২০ ফুট চওড়া এই করিডরটি গঙ্গার ললিতা ঘাট থেকে মন্দির চককে সংযুক্ত করবে।
প্রধানমন্ত্রী আজকে কাশী শহরে গিয়ে বলেছেন, "কাশীতে একটাই সরকার আছে। যার হাতে ডোমরু রয়েছে, সেই মহাদেবের সরকারই এখানে চলে। এই করিডর মহাদেবের কৃপাতে তৈরি হয়েছে। আমরা তো কেবল তা বাস্তবে রূপান্তর করেছি।" তিনি আরও বলেছেন, "কাশী যুগ যুগ ধরে নানা পরিবর্তন দেখে আসছে। ঔরঙ্গজেব থেকে শুরু করে ব্রিটিশ শাসক বা সন্ত্রাসবাদি, একাধিক আক্রমণের মুখে পড়েছে এই শহর। তবুও কোনোদিন এই শহরের উন্নয়ন থেমে যায়নি। বিগত সাত বছর ধরে কাশীতে যে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছিল তার প্রথম ধাপ পূর্ণ হল আজ।"