দীর্ঘ ছ’মাস পরে ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সংসদের বাদল অধিবেশনে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করানোর পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের৷ বিলগুলির মধ্যে এগারোটিতে আগেই অর্ডিন্যান্স জারি রয়েছে৷ সংসদে পাশ করিয়ে সেগুলিকে আইনে পরিণত করতে চায় সরকার৷
অর্ডিন্যান্সগুলোর মধ্যে তিনটি হল কৃষি বিপণন সম্পর্কিত, যেগুলি নিয়ে দেশে বেশ কিছুদিন ধরে জোরদার বিতর্ক চলছে৷ এই অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী কৃষির বাজারে বা খাদ্যশস্যের দামে আর সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকছে না৷ এর ফল ফলতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই৷ গত বছরের জুলাইতে চাল–গমের যা দাম ছিল, এ বছর উৎপাদন বেশি হওয়া সত্ত্বেও ওই একই সময়ে তার দাম দশ শতাংশ বেড়েছে৷
বাকি দুটি অর্ডিন্যান্সের একটিতে কৃষিপণ্যের রপ্তানি বাড়ানো, অপরটিতে ফড়ে, দালালদের হঠিয়ে চাষির সরাসরি ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে ফসলের ন্যায্য দাম আদায় করার সুযোগের কথা বলা হয়েছে৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথমটির ফলে রপ্তানি বাড়লেও আর্থিক মন্দা ও অতিমারির এই সময়ে চাল–গমের দাম দেশের খেটে–খাওয়া মানুষের নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে৷ দ্বিতীয়টি সম্পর্কে তাঁরা বলছেন, আমাদের দেশে ছোট চাষির সংখ্যা নব্বই শতাংশেরও বেশি৷ বড় ব্যবসায়ীদের সরাসরি চাপ দিয়ে ফসলের দাম স্থির করার ক্ষমতা তাঁদের নেই৷ ছোট–চাষিদের জীবন–জীবিকা এভাবে বৃহৎ ব্যবসায়ীদের মুঠোয় তুলে দিতে চলেছে সরকার৷
ব্যাঙ্কিং রেগুলেশন বিল নিয়েও নানা প্রশ্ণ উঠেছে৷ বলা হচ্ছে, গ্রামীণ অর্থনীতির ক্ষেত্রে এর কুপ্রভাব হবে মারাত্মক৷
অতিমারির অজুহাতে সংসদে আলোচনা, তর্ক–বিতর্কের সময় কমিয়ে দিয়ে লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে যেনতেনপ্রকারেণ বিলগুলি পাশ করিয়ে নিতে চায় বিজেপি সরকার– অভিযোগ বিরোধীদের৷ রাজ্যসভায় বিলগুলি কড়া হাতে মোকাবিলার পরিকল্পনা করছেন তাঁরা৷ এই অবস্থায় বিলগুলি আইনে পরিণত হতে পারবে কি না, সময়ই তা বলবে৷