অন্যান্য মন্দিরের ক্ষেত্রে যে নিয়মই থাকুক না কেন, পুরীর মন্দিরে হিন্দু ব্যতীত অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষদের প্রবেশের ক্ষেত্রে ছিল কড়া নিষেধাজ্ঞা। এমনকি হিন্দুদের ক্ষেত্রেও ছিল কড়া বিধি। অন্যান্য বড়ো মন্দিরের মতোন পুরীতেও ছিল ফোন ও ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা। এমনকি পশুর চামড়া দিয়ে তৈরী বেল্ট বা মানিব্যাগ কিংবা মেয়েদের ব্যাগ, এসব কিছুই নিয়ে প্রবেশ করা যেত না। এত্ত নিয়মের পরেও এবার আরও কড়া হচ্ছে পুরীর মন্দিরের কমিটি।
এবার সেবায়েত, পান্ডাদের পাশাপাশি শ্রীজগন্নাথ মন্দিরের কর্মচারীদের প্রবেশের জন্য নির্দিষ্ট পোশাকবিধি বাধ্যতামূলকভাবে চালু হচ্ছে। মন্দির পরিচালন কমিটির তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মন্দিরের গর্ভগৃহে এবং পুজোর জন্য যে সেবায়েতরা আসবেন, তাঁদের ধুতি, পট্টবস্ত্র এবং গামছা থাকতে হবে। এমনকি যতক্ষণ সেবায়েতরা মন্দিরের ভিতরে থাকবেন, ততক্ষণ তাঁদের গলায় থাকতে হবে সরকার অনুমোদিত পরিচয়পত্র।
হঠাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত? জানা গেছে, অনেক আগে থেকেই বহু অভিযোগ জমা পড়েছিল 'ভন্ড পূজারি'র। মনে করা হয়েছিল, কিছুদল ঠগবাজ মানুষ, সাধারণ দর্শনার্থীদের বোকা বানিয়ে নিজেদের পুরীর মন্দিরের প্রভাবশালী পুরোহিত বলে জাহির করে মন্দিরের কারোর মদতে সরাসরি গর্ভগৃহে প্রবেশ করতেন। এবং মানুষের থেকে পুজোর নামে বহু টাকা দাবি করতেন। তবে পরে জানা যেত, সবটাই মিথ্যা। এখানেই শেষ নয়, বহু সেবায়েত প্যান্ট-শার্ট পরেই গর্ভগৃহে প্রবেশ করতেন, যা একেবারেই না পসন্দ মন্দির পরিচালন কমিটির।
এমন অভিযোগ রুখতে কার্যত সেবায়েত, পান্ডাদের পাশাপাশি শ্রীজগন্নাথ মন্দিরের কর্মচারীদের প্রবেশের জন্য নির্দিষ্ট পোশাকবিধি বাধ্যতামূলকভাবে চালু হচ্ছে। কমিটির এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন মন্দিরের প্রধান দৈতাপতি জগন্নাথ সোয়াইন থেকে শুরু করে পুরীর রাজগুরু দেবীপ্রসাদ মহাপাত্র।
শ্রীমন্দিরের প্রধান সঞ্চারী ও পরিচালন কমিটির প্রবীণ সদস্য নীলকন্ঠ মহাপাত্র জানিয়েছেন, "শ্রীমন্দিরের পুজোর রীতি ও আচরণ না মেনে অনেক কমবয়সি সেবায়েত প্যান্ট-শার্ট, এমনকী জিন্স পরে ঢুকে পড়ছে। বিগ্রহের কাছে যাওয়া ও বন্দনার ক্ষেত্রে তাই পৌরাণিক ও ধর্মীয় অনুষঙ্গ রেখে ধুতি-পট্টবস্ত্রের পোশাকবিধি চালু করা হচ্ছে।"