বেশ কিছুদিন ধরেই হিজাব (hijab) বিতর্কে উত্তাল ভারতবর্ষ। কর্ণাটকের (Karnataka) এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরাকে কেন্দ্র করে সেখানের হিন্দুত্ববাদী ছাত্রছাত্রীদের গেরুয়া বসন পরা বা ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দেওয়া, বিতর্ক ছড়িয়েছে বাংলা-সহ দেশের অন্যান্য রাজ্যেও। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল কর্ণাটক হাইকোর্ট। জানানো হল, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ইউনিফর্ম (uniform) থাকলে সেখানে হিজাব, গেরুয়া শাল কিংবা কোনও ধর্মীয় পতাকা গায়ে চাপিয়ে আসা যাবে না’।
কর্ণাটক হাইকোর্টের ফুলবেঞ্চ অন্তর্বর্তী আদেশে এও জানিয়েছে, কেবলমাত্র যে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইউনিফর্ম বাধ্যতামূলক, সেখানেই লাগু হবে এই নিয়ম। উল্লেখ্য, হাইকোর্টে অর্ডারটি বৃহস্পতিবারে পাশ হলেও তা প্রকাশ করা হয় শুক্রবারে। বিচারকের বেঞ্চে ছিলেন প্রধান বিচারপতি ঋতু রাই আওাস্তি এবং অন্য বিচারপতিদের মধ্যে ছিলেন কৃষ্ণা এস দিক্ষিত এবং জেএম খাজি।
বিচারকদের তরফে বলা হয়েছে, ‘রায়ে স্পষ্টভাবে জানানো হচ্ছে, যে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কলেজ ডেভেলপমেন্ট কমিটি (CDCs) নির্দিষ্ট ড্রেস কোড বা ইউনিফর্ম নির্ধারণ করেছে, শুধুমাত্র সেখানেই এই আদেশ কার্যকরী হবে’। সেইসাথে সরকারের কাছে আদালতের তরফে এই আবেদনও করা হয়েছে, যত শীঘ্র সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি খুলে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসরুমে ফেরার অনুমতি দেওয়া হোক।
কোর্টের রায়, ‘আমাদের দেশ একাধিক সংস্কৃতি, ধর্ম এবং ভাষার দেশ। এটি (কর্ণাটক) একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হওয়ায় এর নিজের কোনও ধর্মীয় পরিচয় নেই। প্রত্যেক রাজ্যবাসীর ধর্মীয় পছন্দের অধিকার আছে। তবে সাংবিধানিকভাবে ক্লাসরুমে হিজাব পরা আদৌ ইসলাম ধর্মের কোনও অবিচ্ছেদ্য অংশ কিনা, তার উপর গভীর নিরীক্ষণ প্রয়োজন’। কোর্টের মতে, ভারতের মতো সভ্য সমাজে ধর্ম, সংস্কৃতির নামে কোনও মানুষের শান্তিভঙ্গের অধিকার নেই।