দীর্ঘ এগারো বছরের ব্যর্থতা গ্রাস করেছে তাকে! যেভাবেই হোক পাশ করতেই হবে এবারে। জনৈক মেডিকেল শিক্ষার্থী তাই ফাঁদলেন অভিনব কৌশল, নিজের কানে অস্ত্রপ্রচার করে সংযুক্ত করলেন একটি ব্লুটুথ ডিভাইস! ধরা পড়ে যেতে, এক নিমেষে জীবনের কাছেও অসফলতার দাগে দাগী হয়ে গেলেন ইন্দোরের মহাত্মা গান্ধী মেডিকেল কলেজের এক ডাক্তারি পরীক্ষার্থী ছাত্র। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের মহাত্মা গান্ধী মেডিকেল কলেজে এমবিবিএসের পরীক্ষা চলছিল। যথা সময়ে ও নিয়মে পরীক্ষা শুরু হলে, ঘণ্টা খানেক পর আকস্মিকভাবে জববলপুর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পরীক্ষকের দল প্রবেশ করেন পরীক্ষা কেন্দ্রে। তাদের দ্বারাই সর্বপ্রথম পরীক্ষা কেন্দ্রে এক শিক্ষার্থীর মারফত তার ট্রাউজারের ভেতর থেকে মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়। সেই শিক্ষার্থীই জানান যে, তিনি একা নন, পরীক্ষায় 'নকল' করতে তার দলে আছেন আরো বেশ কিছুজন।
কিন্তু প্রাথমিকভাবে মোবাইলের সঙ্গে সংযুক্ত কোন ব্লুটুথ ডিভাইস খুঁজে না পাওয়ায়, তাকে কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায় এক বিস্ময়কর তথ্য। দেখা যায়, সেই শিক্ষার্থীর কানে, চামড়ার রঙে একটি ব্লুটুথ ডিভাইস প্রযুক্ত করা আছে। আর সেটিই হল সেই শিক্ষার্থীর শেষ 'বাঁচার সম্বল'।
আরো জানা যায়, তার পরিচিত এক ইএনটি চিকিৎসকের সহায়তায়, পরীক্ষার্থীটি এই বিরল পন্থা, ভবিষ্যত তথা প্রাণের ঝুঁকি থাকা সত্বেও অবলম্বন করতে পিছপা হননি। মেডিকেল কলেজের ডিন, ডক্টর সঞ্জয় দীক্ষিতের বয়ানে, সেই পরীক্ষার্থীটি ছিলেন টানা এগারো বছর ধরে ডাক্তারিপরীক্ষায় অকৃতকার্য, এবারই ছিল তার শেষ সুযোগ। অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের সাথেই তিনি জেনারেল মেডিসিন পরীক্ষা দিতে বসেন, কিন্তু তার সঙ্গে যে কোন 'বিপদ' তিনি বহন করছেন, টের পাননি কেউই!
পরীক্ষায় 'নকল' নতুন নয়, কিন্তু এমন ঝুঁকিপূর্ন 'টুকলি' বোধ হয় ইতিহাসে প্রথম! শিক্ষার্থীটি জানান, তার আর এক বন্ধুর কাছেও মাইক্রো ব্লুটুথ ডিভাইস রয়েছে। উভয়কেই গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, যেই ইএনটি চিকিৎসক এই গোটা প্রক্রিয়ায় গৌণ ভাবে ভূমিকা পালন করলেন, তিনিও ছাড় পাবেননা ওপরমহল থেকে। এমন ঘটনার দরুন স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে কলেজ প্রশাসনের বিরুদ্ধে! কিন্তু কোনো মানুষই যে এমন 'অভিনব' কীর্তির প্রত্যাশা কখনোই করেননা, সেই ঘটনাকেও উপেক্ষা করা যায়না।