খাতায়-কলমে বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও বরাবরের ঠোঁটকাটা সুব্রহ্মন্যম স্বামী কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেও পিছপা হন না। ইদানিং কেন্দ্র সরকারকে ইঙ্গিত করে টিপ্পনীর ঝাঁঝও বাড়িয়েছেন তিনি। তার মধ্যেই এবার দিল্লিতে তাঁর সাথেই সাক্ষাৎ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর যা নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল জল্পনা। তবে কি বিজেপির এই বরিষ্ঠ নেতা এবার হাত ধরতে চলেছেন তৃণমূলের? বিজেপির বদলে এবার তৃণমূলেরই কি ‘আচ্ছে দিন’? আরও অনেক প্রশ্ন জাগছে দেশ তথা রাজ্যবাসীর মনে।
বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটে নাগাদ মুখোমুখি বসেন দুই পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ। প্রায় তিরিশ মিনিট কথা হয় দুজনের। যদিও তাঁদের সাক্ষাতের মূল বিষয়বস্তু নিয়ে মুখ খোলেননি কেউই। তবে মমতাকে পাশে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এদিন সুব্রহ্মন্যম স্বামীকে বলতে শোনা গেল, “মমতার সঙ্গে তো বরাবরই আছি। শুরু থেকে আছি”। আর সেই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে তুমুল জল্পনা।
২০২১ বঙ্গ উপনির্বাচনে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছিল বিজেপি। বাংলা দখলের জন্য দিল্লি থেকে প্রায় রোজই উড়ে এসেছিলেন মোদী, অমিত শাহের মতো হেভিওয়েটরা। তবুও নির্বাচনের ফলাফলে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে ‘পৃথিবীর সবথেকে বড় রাজনৈতিক দল’। আর বিজেপির সেই বিশাল পতনের সাথেই শুরু হয়েছে তৃণমূলের বিরাট উত্থান। আর শুধু রাজ্য নয়, একেবারে সর্বভারতীয় আঙিনায় নিজেদের অধিকার কায়েম করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছে তৃণমূল। বাংলার পরেই ত্রিপুরা, ত্রিপুরার পরেই গোয়া। একের পোড় এক রাজ্যে নিজেদের ভিত শক্ত করতে নিত্যদিনই বাংলা থেকে ছুটে যাচ্ছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। কংগ্রেস, আপ, জেডি(ইউ), বিজেপি নির্বিশেষে তৃণমূলে যোগদানও করছেন। এবার সেই তালিকায় কি যোগ হবেন বর্তমান শাসকদলের সচল প্রতিনিধিও? তা সময়ই বলবে! যদিও এর মাঝেই অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, সুব্রহ্মন্যম স্বামী যদি তৃণমূলে যোগদান করেন তাহলে তা খুব একটা অস্বাভাবিক কোনও ঘটনা হবে না। একেই দু’বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদ প্রাপ্ত সুব্রহ্মন্যম মোদীর নবনির্মিত মন্ত্রীসভায় কোনও জায়গা পাননি। উপরন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করায় দলের ৮০ সদস্যের কার্যসমিতির কমিটি থেকে বাদ পড়েছে তাঁর নাম। তার উপর বিরোধী ঝড়ে কার্যত টালমাটাল বিজেপি সরকারের নৌকা। এমতাবস্থায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের হাত ধরতেই পারেন একদা কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে আসা এই প্রবিন রাজনৈতিক নেতা।