বছরের প্রথম দিন ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে সুসম্পর্ক স্থাপন করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হলো দুই দেশের সরকারের তরফ থেকে। প্রায় ৩০ বছর পুরনো পরমাণু সমঝোতা মেনে নিয়ে আরো একবার বছরের প্রথম দিনেই পরমাণু কেন্দ্র সম্পর্কিত তথ্য বিনিময় করে নতুন বছরটা শুরু করল ভারত এবং পাকিস্তান। তবে শুধুমাত্র যে পরমাণু কেন্দ্র সম্পর্কিত তথ্য বিনিময় করা হয়েছে তা কিন্তু নয়, বরং তার সাথেই দুই দেশে একে অপরের জেলবন্দিদের তালিকাও আদান প্রদান করা হয়েছে, যা দুই দেশের আভ্যন্তরীণ সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করতে সাহায্য করবে বলে আশা ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের।
সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে পাকিস্তানের কাছে ৫টি পরমাণু চুল্লি রয়েছে যার মধ্যে, একটিতে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করছে ভারতের অন্য এক প্রতিপক্ষ রাষ্ট্র চিন। কিন্তু এই পরমাণু শক্তি ক্ষেত্রে পাকিস্তানের আরো একটি সমস্যা রয়েছে। বর্তমানে পাকিস্তান পরমাণু শক্তি বিস্তার নিয়ন্ত্রক চুক্তি ওরফে নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি এর আওতায় নেই। এবং এই কারণেই বিশ্বের প্রায় কোন দেশ থেকেই বর্তমানে পরমাণু শক্তি সংক্রান্ত প্রযুক্তি এবং তথ্য ও পণ্য আমদানি করতে পারে না পাকিস্তান। তার সঙ্গেই ভারত এবং পাকিস্তানের বিভিন্ন জেলায় দুই দেশের বহু নাগরিক এখনো পর্যন্ত বন্দি রয়েছেন। এই বিষয়টি দুই দেশের সম্পর্ককে অনেকাংশে তিক্ত করে তোলে। আজকের বৈঠকে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে জেলবন্দিদের বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে বলে খবর।
ভারত সরকারের বিদেশ সচিব জানালেন, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু কেন্দ্রে হামলা প্রতিরোধ সংক্রান্ত একাধিক তথ্য দুই দেশের মধ্যে আদান-প্রদান করা হচ্ছে সেই ১৯৮৮ থেকে। প্রথমবারের জন্য ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে এই সমঝোতা পত্রে স্বাক্ষর করা হয়েছিল ৩১ ডিসেম্বর ১৯৮৮। তারপর থেকে দীর্ঘ বহু বছর ধরেই এই রীতি চলে আসছে। ২০২২ সালে ৩১ তম বার এই সমঝোতা পত্র স্বাক্ষর করা হলো। অন্যদিকে প্রথমবার তথ্য আদান-প্রদান করা হয়েছিল ১৯৯২ সালের ১ জানুয়ারি। সেই রীতি মেনে ২০২২ এর ১ জানুয়ারিও ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে আদান প্রদান করা হলো পরমাণু কেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য। তার পাশাপাশি আদান প্রদান করা হলো জেলবন্দিদের সংখ্যা ও তাদের তথ্যাদি। বিদেশমন্ত্রক সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে পাকিস্তানের বিভিন্ন জেলে ৫১ জন ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গেই বন্দী আছেন ৫৭৭ জন মৎস্যজীবী। অন্যদিকে, ভারতের বিভিন্ন জেলে ২৮২ পাকিস্তানি নাগরিক বন্দী রয়েছেন এবং রয়েছেন ৭৩ জন মৎস্যজীবী। তাদের বিষয় নিয়েও দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে বলে আশা করছে দুই দেশের বিদেশমন্ত্রক।