করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বারংবার স্যানিটাইজ করা প্রত্যেকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। বাড়ির বাইরে বেরোলেই সংক্রামিত হওয়ার সম্ভবনা গোটা বিশ্ববাসীর মনে ভয়ের সঞ্চার করেছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তাও এখনও অব্দি স্যানিটাইজ করার প্রয়োজনীয়তা বিলুপ্ত হয়নি। তবে এই অতিমারী পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত সতর্ক হতে গিয়ে বৈবাহিক সম্পর্কে চিড় ধরল ব্যাঙ্গালোরের এক দম্পতির। শুনে অবাক হলেন নিশ্চয়ই। আসলে ৩৫ বছরের এক মহিলা সম্প্রতি প্রযুক্তিক্ষেত্রে কর্মরত তাঁর স্বামীর ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন সাবান দিয়ে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করেছিলেন। আর তাতেই বেজায় চটেছেন স্বামী যা বর্তমানে বিবাহ বিচ্ছেদের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
জানা গিয়েছে, ওই মহিলা OCD বা অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডারে ভুগছেন। ২০০৯ সালে তিনি বিয়ে করেন এবং স্বামীর সাথে ইংল্যান্ডে চলে যান। তাঁর স্বামী ইংল্যান্ডের এক টেক জায়েন্ট কোম্পানির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। প্রথমে তাঁদের দাম্পত্য জীবন সুখে কাটলেও সমস্যা শুরু হয় ২ বছর বাদে যখন তাঁদের প্রথম সন্তান জন্ম নেয়। ওই সময় থেকেই ওই মহিলা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার ওপর বেশি নজর দিতে শুরু করেন। স্বামী অফিস থেকে ফিরলেই তাঁকে জামাকাপড়, জুতো এমনকি মোবাইল ফোন প্রতিনিয়ত পরিষ্কার করতে হত। স্ত্রীয়ের এই অতিরিক্ত পরিচ্ছন্নতা ধীরে ধীরে অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তবে ওই ব্যক্তি ইংল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যায় এবং দীর্ঘসময় ধরে কাউন্সিলিং শুরু হয়। প্রথমে স্ত্রীয়ের অবস্থার বেশ উন্নতি হওয়াই স্বস্তি পান ওই ব্যক্তি। সম্পর্কের উন্নতি হলে তাঁদের ঘর আলো করে জন্ম নেয় দ্বিতীয় সন্তান। কিন্তু তার কিছু সময়ের মধ্যেই বিশ্বে প্রকোপ দেখা যায় মারণ রোগ করোনার। এই প্রসঙ্গে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, "করোনার সময় ওই মহিলা ঘরের ছোটখাটো জিনিস থেকে শুরু করে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি সাবান দিয়ে ধুতে শুরু করেন। এমনকি একবার ওই মহিলা স্বামীর ল্যাপটপ ও মোবাইল সাবান দিয়ে ধুয়ে দেন। এছাড়া স্বামীকে ওই মহিলা দৈনন্দিন ৬ বার করে স্নান করতে বাধ্য করতেন।"
এরপর চলতি বছরের শেষের দিকে ওই মহিলার মায়ের মৃত্যু হলে স্বামী ও সন্তানদের এক মাসের জন্য বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি ওই মহিলা। এরপরই অতিষ্ঠ হয়ে স্বামী পুলিশের দ্বারস্থ হয় ও বিবাহ বিচ্ছেদের আর্জি জানায়। কিন্তু ওই মহিলা OCD তে আক্রান্ত হওয়ায় আপাতত ব্যাঙ্গালোরের পুলিশ মহিলা সহায়ক কাউন্সিলারের কাছে পাঠিয়েছে। তবে উল্টোদিকে ওই স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে হয়রানি করার পুলিশ কেস করেছেন।