দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে টালবাহানার পরে ভারত সরকারের সাহায্যপ্রাপ্ত ভ্যাকসিন কো ভ্যাকসিন অবশেষে ছাড়পত্র পেয়ে গেল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। এই ভ্যাকসিনটিকে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ব্যবহার করার জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে। জানুয়ারি মাসে এই ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছিল ভারত বায়োটেক। তৃতীয় ট্রায়াল' তখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়নি কিন্তু তার আগেই এই ভ্যাকসিন চালু করে দেওয়া হয়েছিল ভারতে। সেই সময় এই ভ্যাকসিন নিয়ে বিস্তার বিতর্ক হয়েছিল বটে, কিন্তু ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সব সময় এই ভ্যাকসিনকে সাহায্য করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ভারত বায়োটেক এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই ভ্যাকসিনের কর্মক্ষমতা ৭৮% এবং করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই ভ্যাকসিন যথেষ্ট ক্রিয়াশীল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে প্রথমেই এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়া হয়নি, কিন্তু পরবর্তীতে ফার্মের চেয়ারম্যান ডঃ কৃষ্ণ এল্লা বিবৃতিতে জানান, ভারত বায়োটেক এর তৈরি করা এই ভ্যাকসিন ২০০% সুরক্ষিত এবং এই ভ্যাকসিন এর কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। জুলাই মাসে ভারত বায়োটেক এর পক্ষ থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে এই ভ্যাকসিনের অনুমোদনের জন্য আবেদন জানানো হয়। গত মাসে হু এর এক্সপার্ট প্যানেলের পক্ষ থেকে ভারত বায়োটেক এর কাছে আরও বেশ কিছু তথ্য চেয়ে পাঠানো হয় এই ভ্যাকসিন এর ব্যাপারে। তার প্রত্যুত্তরে একটি দীর্ঘ রিপোর্ট পাঠায় ভারত বায়োটেক।
এই রিপোর্টের সারাংশ -
-
ভারত বায়োটেক এর এই ভ্যাকসিন সম্পূর্ণরূপে সুরক্ষিত এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সের যে কোন ব্যক্তি এই ভ্যাকসিন ব্যবহার করতে পারবেন। এই ভ্যাকসিন এর দুটি ডোজ আছে, এবং প্রত্যেকটি ডোজের মধ্যে সময়ের ব্যবধান ৪ সপ্তাহ থাকতে হবে।
-
দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৪ দিন বা তার পর থেকে এই ভ্যাকসিন কোভিড - ১৯ এর বিরুদ্ধে ৭৮% কার্যশীল থাকে। নিম্ন এবং মাঝারি আয়বিশিষ্ট যেকোনো দেশের পক্ষে এই কো ভ্যাকসিন সম্পূর্ণরূপে ব্যবহারযোগ্য এবং এই ভ্যাকসিন যথেষ্ট ভালোভাবেই কম খরচের মধ্যে রাখা যায়।
-
তবে গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এখনো পর্যন্ত এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সম্পূর্ণরূপে জানা সম্ভব হয়নি।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে কো ভ্যাকসিন অনুমোদিত হওয়ার পরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে ভারত সরকার। ইতিমধ্যেই বহু দেশ কো ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দিয়েছে। ভারত সরকার আশা করছে, এই অনুমোদন পাওয়ার পরে বিশ্বের আরো বেশ কিছু দেশ এই ভ্যাকসিনকে ব্যবহারযোগ্য হিসেবে অনুমোদন দেবে এবং বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিনের প্রত্যেক দেশের কাছ থেকেই অনুমোদিত হবে।