হাথরস কাণ্ডের ঠিক ১ মাসের মাথায় আবারো ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা যোগী রাজ্যে। এবারে উত্তর প্রদেশের বদায়ু জেলায় গণধর্ষণ করে খুন করা হলো এক ৫০ বছরের প্রৌঢ়াকে। সবথেকে চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো এই ধর্ষকদের মধ্যে আছেন একজন পুরোহিত এবং বাকি দুইজন তার চ্যালা চামুণ্ডা। রবিবার মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হন ওই মহিলা। তারপর সেইদিন রাতেই তার বাড়ির সামনে ওই মহিলার মৃতদেহ ফেলে দিয়ে যায় ধর্ষকরা। একইভাবে এই ঘটনাতেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ধর্ষিতার পরিবারের অভিযোগ আগে পুলিশে রিপোর্ট দায়ের করেও তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। এমনকি যখন সেই মহিলার মৃতদেহ পাওয়া যায় তখনও পুলিশ তেমন কোনো অ্যাকশন নেয়নি। কিন্তু পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট সামনে আসতেই চোখ কপালে ওঠে যোগী প্রশাসনের।
রবিবার সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ ওই বছর ৫০ এর মহিলা যিনি পেশায় অঙ্গনওয়ারি কর্মী, তিনি মন্দিরে পুজো দিতে যান। বাড়ি না ফেরায় তার পরিবার পুলিশে রিপোর্ট দায়ের করার জন্য যায়। তারপর তার বাড়ির সামনেই ১১.৩০ নাগাদ ওই মহিলার মৃতদেহ ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় ধর্ষকরা। ধর্ষিতার পরিবার জানিয়েছে ওই ৩ জন ছিলেন মন্দিরের পুরোহিত সত্যনারায়ণ এবং বাকি দুজন তার চ্যালা ভেদ রাম এবং ড্রাইভার জসপাল। জানা যায়, ওই ৩ জন ধর্ষিতাকে একটি মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়, কিন্তু সে মারা যাওয়ায় তার রক্তাক্ত দেহ তার বাড়ির সামনে ফেলে দিয়ে তারা পালিয়ে যায়।
ধর্ষিতার পরিবারের সদস্যরা তৎক্ষণাৎ উঘাইতি পুলিশ থানাতে রিপোর্ট দায়ের করতে গেলেও সুপার রবীন্দ্র প্রতাপ সিং তাদের কথা না শুনে তাকে ফিরিয়ে দেন। পরের দিন সোমবার দেহ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট থেকে উঠে আসে, ১৮ ঘন্টা আগেই সেই মহিলার মৃত্যু হয়ে গিয়েছিল। ডাক্তাররা তার গোপনাঙ্গে গভীর ক্ষত এবং রক্তক্ষরণ এর চিহ্ন খুঁজে পান। এছাড়াও তার পা এবং পাঁজরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। মনে করার হচ্ছে দিল্লি নির্ভয়া কাণ্ডের মতই এখানেও মহিলার গোপনাঙ্গে লোহার রড জাতীয় কোনো জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল।
পোস্টমর্টেম রিপোর্ট সামনে আসার পরে শেষমেশ রিপোর্ট গ্রহণ করা হয়। মঙ্গলবার ওই ড্রাইভার এবং চ্যালাকে ধরেছে পুলিশ। তবে মন্দিরের পুরোহিত এখনো অধরা। ওই পুরোহিতকে খুঁজতে পুলিশের ৪ টি টিম তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও এস এস পি সংকল্প শর্মা জানিয়েছেন, উঘাতি পুলিশ স্টেশনের সুপারকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। অন্যদিকে উত্তর প্রদেশ পুলিশের ওপরে আরো বেশি চাপ সৃষ্টি করছে ন্যাশনাল কমিশন ফর উইমেন। তারা জানিয়েছে, এই মামলার তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তাদের একটি টিম যোগদান করবে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসেছেন। তিনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ঘটনার তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। অন্যদিকে বদায়ু জেলার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত কুমার NSA এর কাছে পেশ করার আর্জি জানিয়েছেন।