খারাপ ডিফেন্স এর খেসারত, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান এর কাছে ইস্টবেঙ্গল হারলো ৩-১ ব্যবধানে
এই জয়ের ফলে ১৮ ম্যাচের পরে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে লীগ তালিকায় প্রথম স্থানে দাঁড়িয়ে রইলো সবুজ মেরুন ব্রিগেড
বছরের প্রথম ডার্বিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরেও শেষ হাসি হাসলো সেই এটিকে মোহনবাগান। প্রাধান্য বিস্তার করে ডিফেন্ডারদের ভুলে ৩-১ ব্যবধানে হারতে হলো ইস্টবেঙ্গল কে। এই জয়ের ফলে ১৮ ম্যাচের পরে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে লীগ তালিকায় প্রথম স্থানে দাঁড়িয়ে রইলো সবুজ মেরুন ব্রিগেড। অন্যদিকে, ১৮ ম্যাচে মাত্র ১৭ পয়েন্ট সংগ্রহ করে নবম স্থানে পড়ে রইল লাল-হলুদ বাহিনী। ম্যাচের প্রথম থেকেই এটিকে মোহনবাগান এদিন লাগাতার আক্রমণ করতে শুরু করে। ম্যাচের প্রথম দিকেই একটি গোল করে ম্যাচে অনেকটা এগিয়ে যায় এটিকে মোহনবাগান। প্রাণপণ লড়াই করে ইস্টবেঙ্গল। প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যে একাধিক বার করে কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন এটিকে মোহনবাগানের খেলোয়াড়রা। ম্যাচের মাত্র ১৫ মিনিটের মাথায় লম্বা ভাসানো বল নিয়ে মাঝমাঠ থেকে দৌড়ে বক্সে ঢুকে ইস্টবেঙ্গল গোলকিপারকে কাটিয়ে ম্যাচের প্রথম গোল করেন ফিজিয়ান স্ট্রাইকার তথা মোহনবাগান এর অন্যতম প্রধান অস্ত্র রয় কৃষ্ণা।
রয় কৃষ্ণার এই গোলের পর অনেকটা ব্যাকফুটে চলে যায় ইস্টবেঙ্গল। লাল-হলুদের লাইফলাইন ব্রাইট এনোবাখারে, জ্যাকয়াস মাঘোমা এবং এন্টনি পিলকিংটন কার্যত আটকে যান। মোহনবাগানের সন্দেশ ঝিঙ্গান, টিরি এবং প্রীতম কোটাল তাদেরকে একেবারে আটকে দেন। ম্যাচের ৩৫ মিনিটের মাথায় আচমকাই গতি বাড়িয়ে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করে ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের ৪১ মিনিটের মাথায়সেট পিস থেকে আত্মঘাতী গোল করেন এটিকে মোহনবাগানের যোস লুইস আরয়া।
দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলের মধ্যে তুল্যমূল্য লড়াই হল। আক্রমণ প্রতিআক্রমণ টানটান খেলায় বলের নিয়ন্ত্রণ এবং পাসিং ফুটবলের খেলা একে অপরকে টেক্কা দিতে শুরু করেন কলকাতা দুই প্রধান ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা। কড়া ট্যাকেল চলতে শুরু করে দুটি দলের মধ্যে। ৬৬ মিনিটের মাথায় এটিকে মোহনবাগানের বক্সে ঢুকে পড়েন ব্রাইট। কিন্তু ফিনিশ করতে পারলেন না। ৬০ মিনিটের মাথায় মার্সেলিনো পরিবর্তে মাঠে নামলেন জাভি হার্নান্দেজ। তারপর থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ অনেকটা চলে যায় এটিকে মোহনবাগানের হাতে। ৬৫ মিনিট এরপর থেকে আক্রমণে গতি বাড়ায় এটিকে মোহনবাগান। চোরাগোপ্তা আক্রমণ করতে শুরু করেন রয় কৃষ্ণা রা। চাপের মুখে ম্যাচের শেষ দিকে ভুল করে বসলেন ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্স এর অন্যতম বড় স্তম্ভ ড্যানি ফক্স। ৭২ মিনিটের মাথায় গোল করে এটিকে মোহনবাগান কে আবার এগিয়ে দিলেন ডেভিড উইলিয়ামস। আর ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে ৮৯ মিনিটের মাথায় হেডার থেকে গোল করে সবুজ মেরুন এর জয় নিশ্চিত করে দিলেন সেই সাবস্টিটিউট খেলোয়াড় জাভি হার্নান্দেজ।
ম্যাচে অত্যন্ত শক্তিশালী মোহনবাগান এর বিরুদ্ধে দারুন লড়াই করল ইস্টবেঙ্গল। গোল তারা করতে পারেনি, কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়া সুযোগ দিলেন না ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়রা। অন্যদিকে এটিকে মোহনবাগান এদিন খেললো একেবারে টেবিল টপারদের মত। দুর্দান্ত পাস, সুন্দর ট্যাকেল, আর চোরাগোপ্তা আক্রমণ সব মিলিয়ে শুক্রবারের সন্ধ্যাটা জমিয়ে দিল বছরের প্রথম ডার্বি।